বর্ধমান, ০৬ এপ্রিলঃ- অজান্তে গ্রাহকের এটিএম কার্ড হাতিয়ে নিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। ধৃতের নাম অলক পাল। বর্ধমান শহরের টিকরহাট বেলতলা এলাকায় ধৃতের বাড়ি। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ ব্যাঙ্ক থেকেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার ধৃতকে বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে ৩ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। যদিও এদিনই কেসের অভিযোগকারিনী আদালতে এফিডেভিট জমা দিয়ে জানান, বিষয়টির মিটমাট হয়ে গিয়েছে। তার ভিত্তিতে আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ ধৃতের জামিন চান। যদিও এফিডেভিট জমা দেওয়াকে আমল না দিয়ে জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ধৃতকে ২ দিন পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন সিজেএম সেলিম আহমেদ আনসারি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর সুকান্তপল্লির শুভ্রা দত্ত-র রাষ্টায়াত্ত ব্যাঙ্কটির সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের শাখায় একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তিনি কোনওদিন এটিএম কার্ডের জন্য আবেদন করেননি। তা সত্ত্বেও ২০০৯ সালের ২০ মে তাঁর নামে একটি এটিএম কার্ড ইস্যু হয়। যদিও তিনি কার্ডটি ব্যাঙ্ক থেকে নেননি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে তিনি জানতে পারেন, এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কে খোঁজখবর নিয়ে তিনি আরও জানতে পারেন, ২২ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কয়েক দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৭৩ হাজার ৬০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তিনি ব্যাঙ্কের শাখা প্রবন্ধককে জানান। কিন্তু, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁর অভিযোগকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি। যদিও ব্যাঙ্কের আভ্যন্তরীন তদন্তে, ঘটনার সময়কার এটিএম কার্ড ইস্যু সংক্রান্ত রেজিস্টারটির হদিশ মেলেনি। এরপর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ শুভ্রা দেবীকে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে টাকা দিতে অস্বীকার করায় শাখা প্রবন্ধকের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শুভ্রা দেবী। তার ভিত্তিতে বিশ্বাসভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় কেস রুজু করে তদন্তে নামে থানা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার থেকে শুভ্রা দেবীর এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। সেই এটিএম কাউন্টারটির সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানতে পারে, অলকই টাকা তুলেছে। কখনও চাদরে মুখ ঢেকে, আবার কখনও মুখ নিচু করে তাকে টাকা তুলতে দেখা যায় ফুটেজে। এরই পাশাপাশি পুলিশ জানতে পারে, এটিএম ইস্যু সংক্রান্ত রেজিস্টারটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল অলক। টাকা তোলার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।