Site icon E Purba Bardhaman

জাল অভিযোগের ভিত্তিতে কেস রুজু করে চিটফান্ড কর্তাকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠল বর্ধমান থানার বিরুদ্ধে

বর্ধমান, ১৬ ফেব্রুয়ারিঃ- জাল অভিযোগের ভিত্তিতে কেস রুজু করার অভিযোগ উঠল বর্ধমান থানার বিরুদ্ধে। শুধু কেস রুজু করাই নয়, সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই চিটফান্ডের ট্রেজারারকে গ্রেপ্তারো করে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাকে পুলিশি হেপাজতেও নেওয়া হয়। যদিও তাতে তদন্তে বিন্দুমাত্র অগ্রগতি হয়নি। কারন, ধৃতকে হেপাজতে নেওয়ার পরই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শনিবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ সেল থেকে ছাড়া পাওয়ায় এদিনই তাকে আদালতে পেশ করা হয়। ধৃত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তদন্ত এক চুলও এগোয়নি সেকথা সিজেএম আদালতে রিপোর্ট পেশ করে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। ধৃতের আইনজীবীদের এবং সরকারি আইনজীবীর সওয়াল শোনার পর সিজেএম সেলিম আহমেদ আনসারি তার অর্ন্তবর্তী জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি জাল অভিযোগের ভিত্তিতে কেস রুজু করার ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম। আগামী ২ মার্চ কেসের পরবর্তী শুনানির দিনে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে। সেদিন তদন্তকারী অফিসারকেও আদালতে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম। এধরনের অভিযোগ ওঠায় পুলিশ অস্বস্তিতে পড়বে বলে আইনজীবী মহলের মত। কারন, যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে থানা কেস রুজু করেছে সেই শুভময় বসু আদালতে এফিডেভিট পেশ করে জানিয়েছেন, অভিযোগপত্রটি জাল। অভিযুক্তকেও তিনি চেনেননা। অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর কোনও আর্থিক লেনদেনও হয়নি। মেয়াদ শেষে টাকা ফেরত পেতে তিনি সংস্থায় শংসাপত্র এবং তাঁর সচিত্র পরিচয়পত্র জমা দিয়েছিলেন। সেই সব নথি ব্যবহার করেই জাল অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁর আইনজীবীদের বক্তব্য, অভিযোগে অভিযোগকারীর নাম নেই। তাছাড়া অভিযোগ পত্রে থাকা সইটিও তাঁর নয়। অথচ তাঁর শংসাপত্র ব্যবহার করে কেস রুজু করা হয়েছে। কেস রুজু করার আগে অভিযোগকারীর পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল থানার। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, ঘটনার কথা আমার জানা নেই। আদালতের নির্দেশও এখনও হাতে পাইনি। তবে, আদালত নির্দেশ দিলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আমানতকারীদের জমারাখা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি উৎপল বিশ্বাস নামে চিটফান্ডের এক এজেন্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্ধমান শহরেরই বাবুরবাগ শান্তি কলোনী এলাকায় তার বাড়ি। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানায়, ২০১১ সালে বর্ধমান শহরের মুচিপাড়ার বাসিন্দা শুভময় বসু আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিতে ৪৫ হাজার টাকা জমা রাখেন। মেয়াদান্তে তাঁকে ৪৯ হাজার ৯৫০ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সংস্থাটি। মেয়াদ শেষে টাকা না পেয়ে তিনিই সংস্থাটির কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বলে বর্ধমান থানার পুলিশের দাবি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ উৎপলকে গ্রেপ্তার করে। যদিও ধরা পড়ার কয়েকদিন আগেই সে বর্ধমান থানায় সংস্থার কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতে থানা পৃথক কেসও রুজু করে। যদিও অভিযুক্তরা এখনও অধরা। অভিযুক্তদের আড়াল করতেই পুলিশ উৎপলকে ধরেছে বলে তার আইনজীবীদের মত। যদিও এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি থানার আই সি।

Exit mobile version