E Purba Bardhaman

জাল স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করতে এসে সি আই ডি-র জালে ধৃত দুই প্রতারক

Khandaghosh Thana elaka theke CID & Khandaghosh PS-er Joint raidবর্ধমান ও খন্ডঘোষ, ২৩ ফেব্রুয়ারিঃ- সোনার কয়েন বিক্রির নামে একটি বড়সড় প্রতারনা চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। শুক্রবার খন্ডঘোষ থানার কৈয়ড় রেল স্টেশন এলাকায় সি আই ডি এবং পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুজনকে ধরেছে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে কেস রুজু করে খন্ডঘোষ থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শেখ জানে আলম ওরফে সোনা শেখ এবং সামসুদ্দিন হাজরা ওরফে বাপন হাজারি। প্রথম জনের বাড়ি খন্ডঘোষ থানার উখরিদ। অপর জনের বাড়ি একই থানার কালনা গ্রামের হাজারি পাড়ায়। ধৃতদের কাছ থেকে একটি স্বর্ণ মুদ্রা এবং ২১২ টি ধাতব মুদ্রা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। স্বর্ণমুদ্রাটির ওজন প্রায় ১০৮ গ্রাম। শনিবার ধৃতদের বর্ধমানের সিজেএম আদালতে তোলা হয়। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের ৭ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম ভাস্কর মজুমদার ধৃতদের ৬ দিন পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

    সি আই ডি সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার ঠাকুর পুকুর থানার মতিলাল গুপ্ত রোডের বাসিন্দা সঞ্জয় সাহার সঙ্গে বর্ধমান জেলার মাধবডিহি থানার কোট শিমুল গ্রামের বাসিন্দা রাম কমল মাঝির কর্মসূত্রে পরিচয় আছে। কিছুদিন আগে সঞ্জয়কে ফোন করে রাম কমল তাঁর এক পরিচিতের কাছে অনেক গুলি স্বর্ণমুদ্রা আছে বলেন। টাকার প্রয়োজনে মুদ্রাগুলি সে বিক্রি করতে চায় বলে রামকমল জানান সঞ্জয়কে। সোনার কয়েন গুলির ওজন ২ কেজির মতো এবং ৩০ লক্ষ টাকা পেলে সেগুলি বিক্রি করবে বলে তিনি জানান। এরপর কয়েনের মালিকের সঙ্গে সঞ্জয়ের বহুবার ফোনে কথা হয়। এরই মধ্যে তাঁর এক পরিচিতের এধরনের প্রতারনা চক্রের খপ্পরে পড়ার কথা জানতে পারেন সঞ্জয়। লেনদেন সম্পর্কিত কথাবার্তা একই ধরনের হওয়ায় তাঁর মনে সন্দেহ জন্মায়। এর পরই ভবানী ভবনে সি আই ডি অফিসে যোগাযোগ করেন সঞ্জয়। সি আই ডি –র ডেপুটি পুলিশ সুপার সিঞ্চন রায়চৌধুরী-র নির্দেশ মতো কয়েন কেনার ব্যাপারে কথাবার্তা চালিয়ে যান তিনি। এর পরই চক্রটি ধরতে ফাঁদ পাতে সি আই ডি। প্রতারকদের সঙ্গে কথা বলে শুক্রবার সকালে লেনদেনের দিন ঠিক হয়। সেইমতো সিঞ্চন বাবুর নেতৃত্বে একটি টিম সঞ্জয়কে নিয়ে শুক্রবার সকালে খন্ডঘোষ থানায় আসে। ওসির সঙ্গে আলোচনা করে প্রতারকদের ধরার ব্লু – প্রিন্ট তৈরি করা হয়। থানায় বসেই ফোনে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সঞ্জয়। তাঁকে প্রথমে খন্ডঘোষে আসতে বলে প্রতারকরা। সেইমতো সি আই ডি ও পুলিশের যৌথ টিম সঞ্জয়কে নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছে ফোনে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রতারকরা সঞ্জয়কে কৈয়ড় স্টেশনে যেতে বলে। সেইমতো সি আই ডি এবং পুলিশের টিম সেখানে যায়। দুই প্রতারক প্রথমে একটি সোনার কয়েন দেখায়। পরে একটি হাঁড়িতে থাকা ২১২ টি কয়েন দেখায়। এরপর তাড়াতাড়ি টাকা দেওয়ার জন্য বলে দুই প্রতারক। ছদ্মবেশে থাকা যৌথ টিম তখনই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

    খন্ডঘোষ, রায়না, মাধবডিহি ও গলসি থানা এলাকায় নকল সোনার কয়েন এবং প্রাচীন দেব-দেবী মূর্তি বিক্রির একটি প্রতারনা চক্র দীর্ঘদিন সক্রিয় রয়েছে। এর আগে এধরনের বেশ কয়েকটি প্রতারনার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়। তাসত্ত্বেও কারবার বন্ধ হয়নি। তদন্তে নেমে সি আই ডি জানতে পেরেছে, বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার মদতেই রমরমিয়ে চলছে এই কারবার। চক্রের রাজনৈতিক নেতাদের মদত থাকায় স্থানীয় থানা এনিয়ে বিশেষ এগনোর সাহস পায়না। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, গ্যাংটির হদিশ পেতে ধৃতদের পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক রং না দেখে জড়িতদের ধরা হবে।

Exit mobile version