E Purba Bardhaman

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নার্সিং কোয়ার্টার সহ ৫ টি জায়গায় ৩৭ লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় লাইন কাটল বিদ্যুৎ দপ্তর

বর্ধমান, ৩০ জানুয়ারিঃ- বর্ধমান মেডিTaka joma na deoay Burdwan Medicaকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধীনে থাকা নার্সিং কোয়ার্টার, সুইপারদের দু’টি ব্লক এবং দু’টি পাম্প হাউসের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দিল বিদ্যুৎ দপ্তর। মোট প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকার কাছাকাছি এই বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় বুধবার বিকালে বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজন গিয়ে এই ৫ টি জায়গার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেবার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা এবং চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ক্ষুব্ধ কর্মীরা এদিন জানিয়েছেন, প্রতি মাসে তাঁদের বেতনের সঙ্গে বিদ্যুতের বিল কেটে নেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কিভাবে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকল তা নিয়ে তাঁরা নিজেরাই চূড়ান্ত ধন্দে রয়েছেন। এদিন আচমকা এই বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেবার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার অসিত বরণ সামন্তের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিরাশ হয়েছেন বলে দাবী করেছেন। ফলে এদিন সন্ধ্যে থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা। এদিন ক্ষুব্ধ এফ ব্লকের কর্মী চন্দ্রশেখর রাম জানিয়েছেন, আচমকা এদিন বিকালে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁদের চরম কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ই এবং এফ ব্লক মিলিয়ে মোট ৭০ টি পরিবার বাস করেন। এই ঘটনায় তীব্র সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। যদিও এদিন এই ঘটনা সম্পর্কে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার অসিত বরণ সামন্তের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি মিটিং -এর ব্যস্ততা দেখিয়ে সবকিছু এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে, বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের প্রায় জুন মাস থেকেই ওই ৫ টি জায়গার বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়ে গেছে। এর মধ্যে নার্সিং কোয়ার্টারের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার পরিমাণ ১,৬৩৭,৭৪২ টাকা, দু’টি পাম্প হাউসের বকেয়া যথাক্রমে ৩২৬,৭৯৮ টাকা ও ৯০,৫০৭ টাকা এবং দু’টি সুইপার কোয়ার্টারের বাকি যথাক্রমে ১,০৮৭,৮৫৫ টাকা ও  ৬৭০,০৬৪ টাকা । সব মিলিয়ে এই বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা বলে জানা গেছে। এব্যাপারে বর্ধমান পাওয়ার হাউসের ষ্টেশন মাষ্টার তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক মণ্ডল জানিয়েছেন, এই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটানোর জন্য তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারকে লিখিতভাবে জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তিনি কোনো উচ্চবাচ্য করেননি। এরপরেই বুধবার বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রতিনিধিরা সরাসরি সুপারের সঙ্গে দেখা করে যখন তাঁকে এই বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে জানান, তখন তিনি একটি চিঠিতে তাঁর উত্তর দেন। ওই চিঠি অনুসারে ওই ৫ টি কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মিটারের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাদেরই। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো দায় নেই। কৌশিক মন্ডল জানিয়েছেন, এর আগেও তাঁরা হাসপাতাল সুপারের নামেই বিল পাঠিয়েছেন এবং তাঁরাই বিল পেমেন্ট করেছেন। তাহলে হঠাৎ করে এই উত্তর তাঁদের সন্তুষ্টি করতে পারেনি। আর এরপরেই তাঁরা ওই ৫ টি জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিতে বাধ্য হন। শুধু এটাই নয়, এদিন কৌশিক বাবু জানিয়েছেন, ওই ৫ টি জায়গা ছাড়াও খোদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সুপারের কোয়ার্টারের পাম্প হাউসের জন্যই প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে এদিন বর্ধমানের জেলাশাসক তথা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির অন্যতম সদস্য ওঙ্কার সিং মীনা জানিয়েছে, এই সমস্যা ওই ৫ টি জায়গার বাসিন্দাদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ফলে এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। তবে এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে বিদ্যুৎ দপ্তর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতেই পারে, এর মধ্যে বিদ্যুৎ দপ্তরের কোনো অন্যায় নেই। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এদিনই তিনি বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। অন্যদিকে, এদিন রাত্রে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী আগামী শনিবারের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই বকেয়া বিল মিটিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

Exit mobile version