সোমবার সপ্তাহের প্রথম এবং বছরের শেষ দিনে সকাল সারে ১০ টা নাগাদ সেন্ট্রাল মার্কেটের একটি খেলার দোকানের মালিক মালপত্র আনতে বেসমেন্টের গোডাউনে গিয়ে দেখেন কয়েকটি ব্যাট জ্বলছে। দমকলে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় মানুষজন আগুন নেভানোর এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে দেন। দমকল আসতে দেরি করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সেই সময় জেলা শাসক অফিস যাচ্ছিলেন। জেলা শাসককের গাড়ি দেখতে পেয়ে ব্যবসায়ীরা তাঁকে আটকান। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। ততক্ষণে বর্ধমান থানার আইসি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। উদ্ধার কার্য শুরু করেন। সারে ১১ টায় দমকলের ইঞ্জিন পৌছায়। ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে। ঘন কালো ধোঁয়া বের হওয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। ফলে আগুনের উৎসমুখ খুজে পেতে হিমশিম খেতে হয় দমকল কর্মীদের। বাইরে থেকেই জলকামান দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু উৎসে জল না পৌঁছানোয় আগুনের দাপট বাড়তেই থাকে। বহুতলের বেসমেন্ট ফাটিয়ে সেই দিক দিয়ে জল দেওয়ার চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা। এরই মাঝে জল শেষ হয়ে যায়। পরে কিছুটা দূরের পুকুর থেকে জল ভরে এনে এবং সেখান থেকেই সরাসরি জলের ব্যবস্থা করে বেলা তিনটে নাগাদ আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর বেসমেন্টে নেমে সরাসরি গোডাউনটিতে পোঁছে যান দমকলের কর্মীরা। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকল কর্মীদের আগুন নিরোধক পোষাক এবং অক্সিজেন মাস্ক না থাকায় দীর্ঘক্ষণ তাঁরা উৎসমুখে ঢুকতে পারেন নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯২ সালে মার্কেটটি তৈরী হয়। সেই সময় বেসমেন্টটি গাড়ি রাখার জন্য ব্যবহার করা হত। পরে পার্কিং প্লেস তুলে দিয়ে সেই জায়গায় তৈরী হয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান। এমনকি বেসমেন্টে থাকা গোডাউনটির তলায় মাটি কেটে বাঙ্কারের মতো তৈরী করে সেখানেও ক্রীড়া সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। পুরসভা এবং দমকলের অনুমোদন ছাড়াই চলেছে বেআইনি নির্মাণ। কিন্তু, পুরসভা এবং দমকল কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মার্কেটে একটি মাত্র যাতায়াতের পথ। পিছনের দিক বেরনোর পথ বুজিয়ে দোকানঘর করে দেওয়া হয়েছে। মাকড়সার জালের মত তার ঝুলছে। মার্কেটে কোনো জল মজুত রাখার ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। পাশাপাশি এই ঘটনা দমকলের পরিকাঠামো এবং কর্মদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিল।
জেলা শাসক ওঙ্কার সিং মীনা বলেন, দেরিতে আসার কারণ নিয়ে আমি দমকলের ওসি’র কাছ থেকে কৈফিয়ৎ চেয়েছি। অন্য একটি ঘটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারণেই দমকল দেরিতে পৌঁছায় বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। বহুতলটির অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ঠিকঠাক নেই। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দমকলের ওসি’কে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।