E Purba Bardhaman

মেমারির নির্মীয়মান কাগজ কারখানায় ডাকাতিতে ব্যবহৃত লরি বীরভূম থেকে উদ্ধার ।গ্রেপ্তার লরিটির চালক

বর্ধমান, ১৫ ফেব্রুয়ারিঃ- মেমারি থানার কোনার পাড়া গ্রামে নির্মীয়মান কাগজ কারখানায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় কিছু ক্লু পেল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে বীরভূমের পাড়ুই থানার দেবগ্রাম থেকে ডাকাতির মালপত্র পাচারে ব্যবহৃত লরিটিকে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। লরিটির চালককেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধরা পড়ার পর ডাকাতির মালপত্র পাচারে তার জড়িত থাকার কথা কবুল করেছে ধৃত চালক। লরিটি থেকে একটি মাফলার, ৯ টি দ্বিখণ্ডিত গামছা এবং কয়েক টুকরো দড়ি তল্লাশিতে পুলিশ উদ্ধার করেছে। লরিটির চালকের মোবাইল ফোনটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। ডাকাতিতে জড়িত লরিটি উদ্ধার হওয়ায় এবং চালকের হদিশ মেলায় কেসের কিনারা দ্রুত করা সম্ভব হবে বলে পুলিশের অনুমান। এছাড়াও চালকের মোবাইল ফোনটিও ডাকাত দলটিকে ধরার ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত লরি চালকের নাম সচিন যাদব। বিহারের বাঁকা জেলায় তার আদি বাড়ি। বর্তমানে সে কলকাতার এপিসি রোডে থাকে। শুক্রবার ধৃতকে বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে ১৪ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম অলকানন্দা সরকার সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার গভীর রাতে ৩৫-৪০ জনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল নির্মীয়মান কাগজ কাগজ কারখানাটিতে হানা দেয়। ডাকাত দলটি লরিতে চেপে এসেছিল। প্রথমে ৫-৬ জন দুষ্কৃতী পাঁচিল টপকে কারখানাটির ভিতরে ঢোকে। কপালে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে দুই নিরাপত্তা রক্ষীর হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। এরপর নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে কারখানার অফিস ঘরে যায়। নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়েই কারখানার অন্য কর্মীদের ডাকায়। অফিস ঘরের দরজা খোলামাত্র দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কর্মীদের আওয়াজ করতে নিষেধ করে। এরপর একে একে দড়ি এবং গামছা দিয়ে কর্মীদের হাত-পা বেঁধে দেয় দুষ্কৃতীরা। কর্মী এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের অফিস ঘরে বেঁধে রেখে লুটপাট চালায় ডাকাতরা। কারখানার ২১ টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল মোটর, তামার তার, সেফটি ভালভ, লোহার রড সঙ্গে আনা লরিতে চাপিয়ে নেয় ডাকাতরা। কর্মীদের মোবাইল ফোন এবং ৪০ হাজার টাকাও লুট করে দুষ্কৃতীরা। অফিস ঘরে থাকা একটি স্টিলের আলমারিও নিয়ে যায় ডাকাতরা। সেটি অবশ্য ধৃতের দেখানো জায়গা থেকেই উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘণ্টা দুয়েক ধরে অপারেশন চললেও কারখানাটি উঁচু পাঁচিলে ঘেরা হওয়ায় আশপাশের কেউই টের পায়নি। কারখানার কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে পরের দিন সকালে কারখানার মালিক মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি লরি উদ্ধার করা হয়েছে। সেটির চালককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে। তদন্তে সেইসব তথ্য বিশেষ সাহায্য করবে। খুব শীঘ্রই গ্যাংটির আরও কয়েকজন ধরা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে।

Exit mobile version