রাজ্যে লিম্বারাম তুলে আনতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। আন্তর্জাতিক মানের তীরন্দাজ তৈরী করতে সাই এবং আর্চারি অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের তিন জায়গায় এক মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করল রাজ্য যুব কল্যাণ দপ্তর।
admin
বর্ধমান, ১১ জানুয়ারিঃ- রাজ্যে লিম্বারাম তুলে আনতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। আন্তর্জাতিক মানের তীরন্দাজ তৈরী করতে সাই এবং আর্চারি অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের তিন জায়গায় এক মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করল রাজ্য যুব কল্যাণ দপ্তর। বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর এবং শিলিগুড়িতে প্রতিভবান তীরন্দাজ বাছাই করে শিবিরের আয়োজন করল যুব কল্যাণ দপ্তর। গত ১০ ডিসেম্বর এই শিবির শুরু হয়। শুক্রবার শিবির শেষ হয়। তিনটি শিবিরের প্রত্যেকটি থেকে ৩০ জন করে খুদে তীরন্দাজ বেছে নেওয়া হয়েছে। বাছাই করা ৯০ জন প্রতিভাবান তীরন্দাজকে নিয়ে চূড়ান্ত পর্বের শিবির বসবে কলকাতায় সাইয়ের পূর্বাঞ্চল কেন্দ্রে। সেখানে ১৫ জন বালক এবং সমসংখ্যক বালিকাকে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে বেছে নেবেন সাইয়ের প্রশিক্ষকরা। বাছাই করা ৩০ তীরন্দাজকে প্রশিক্ষন দেবে সাই। প্রতিবছরই এধরনের শিবিরের আয়োজন করা হবে। ধারাবাহিক বাছাই এবং প্রশিক্ষন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই আন্তর্জাতিক মানের তীরন্দাজ উঠে আসবে বলে সাই এবং রাজ্য আর্চারি সংস্থার কর্তাদের আশা।
বর্ধমান সাই কেন্দ্রে আয়োজিত শিবিরে ৮০ জন বালক ও বালিকা অংশ নেয়। কেশপুরে ৮৫ জন এবং শিলিগুড়িতে ৭৫ জন খুদে শিক্ষার্থী অংশ নেয়। বর্ধমানের শিবিরে বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, হুগলী, কলকাতা এবং বর্ধমানের ছেলে মেয়েরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। সাইয়ের পূর্বাঞ্চল কেন্দ্রের প্রধান প্রশিক্ষক প্রকাশ এইচ গঙ্গাধর এবং বোলপুরের সাই কেন্দ্রের ইউমনাম সানাহাম শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেন। শিবিরে শিক্ষার্থীদের মূলতঃ তীরন্দাজীর প্রাথমিক পাঠ শেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকেরই তীরন্দাজীর প্রাথমিক পাঠ ছিল না। তাই, শিবিরে মূলতঃ শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর অনুশীলনের পাশাপাশি তীর ছোঁড়ার নানা কৌশল সেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকেই তীর-ধনুক নিয়ে শিকারে বেরনোর অভজ্ঞতা আছে। কিন্তু, আধুনিক তীরন্দাজীর বিষয়ে তাদের কোনও ধারনাই ছিলনা। প্রতিযোগিতামূলক তীরন্দাজীতে যে ধরনের তীর এবং ধনুকের ব্যবহার হয় তা হাতে ধরারও অভিজ্ঞতাও অনেকেরই এই প্রথম। নিখুঁত নিশানায় তীর ছুঁড়তে ধনুক ধরা, ছোঁড়ার সময় কব্জির অবস্থান সে বিষয়ে প্রশিক্ষন দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। একমাসের শিবিরে শিক্ষার্থীদের যে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে তা বোঝাগেল এদিনের অনুশীলনে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই টার্গেটে তীর নিক্ষেপ করল। সাইয়ের ইনচার্জ অনন্ত ঘোষ বলেন, রাজ্যে প্রতিভার অভাব নেই। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবানদের বাছাই করে উন্নত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে দেশকে আন্তর্জাতিক মানের তীরন্দাজ উপহার দেওয়ার জন্যই এই শিবির। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে, নিয়মিত এধরনের শিবিরের আয়োজন করতে হবে। যে সব শিক্ষার্থীরা বাদ পড়ল তাদের প্রতিভাও নজর দিতে হবে। তানাহলে এরা ফের হারিয়ে যাবে। রাজ্য আর্চারি সংস্থার সম্পাদক রুপেস কর বলেন, গ্রামে-গঞ্জে প্রচুর প্রতিভাবান তীরন্দাজ রয়েছে। অনেকে তীর-ধনুক দিয়ে শিকার করে। অর্থাৎ নিশানায় তীর ছোঁড়ার ব্যাপারে তাদের কিছুটা যোগ্যতা রয়েছে। সেই সব প্রতিভাকে এক ছাতার তলায় এনে প্রশিক্ষন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের আশা এদের মধ্যে থেকেই নিম্বা রামের মতো তীরন্দাজ মিলবে। সাইয়ের চিফ কোচ গঙ্গাধর অবশ্য শিবির আয়োজনের প্রয়োজীয়তার কথা বললেও শিক্ষার্থীদের উচ্চতা এবং শারীরিক গঠন নিয়ে চিন্তিত। তাঁর মতে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই শরীর, স্বাস্থ ভালো নয়। দারিদ্র্যের কারনে বেড়ে ওঠার সময় ঠিকমতো খাবার না জোটার কারনেই শিক্ষার্থীদের অনেকেরই শারীরিক গঠন ঠিক নয়। সেটাই সমস্যা। কারন তীরন্দাজীতে সাফল্য পেতে শারীরিক এবং মানসিক শক্তি অত্যন্ত জরুরি।