E Purba Bardhaman

সংশোধনাগারেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন গলসির ইরকোনা গ্রামের সুনন্দা পোড়েল। বুধবার থেকে শুরু পরীক্ষা

Burdwan District Correctional Home theke ebar Higher Secondary Examination debe bicharadhin Bondi Sunanda Porel (2) বর্ধমান, ১২ মার্চঃ- সংশোধনাগার থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন গলসির ইরকোনা গ্রামের সুনন্দা পোড়েল। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে পরীক্ষা। তবে, কোনও স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে নয়, সংশোধনাগারেই তার পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংশোধনাগারের একটি পৃথক কক্ষে তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। সংসদের প্রতিনিধি ছাড়াও সংশোধনাগারের রক্ষীরা পরীক্ষা চলাকালীন তার উপর নজরদারি চালাবে। তার এই পরীক্ষায় বসার উদ্যম দেখে উচ্ছ্বসিত সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। তার পরীক্ষায় বসার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে সংশোধনাগারের তরফে। পরীক্ষার প্রস্তুতি যাতে সে ভালো ভাবে নিতে পারে সেজন্য তার টিউশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তাকে পড়াশুনায় সাহায্য করছে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাবিনা শবনম। সেও সংশোধনাগার থেকে বি এ পরীক্ষায় বসবে। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে তার পরীক্ষা শুরু হবে। নিজের প্রস্তুতির পাশাপাশি সুনন্দাকে সাহায্য করছে সবনম।

     সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ইরকোনা গ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হয় বিপদতারণ ওরফে সুকুমার পোড়েলের। সেই ঘটনায় সুনন্দা, তাঁর বাবা গঙ্গাধর, মা শিখা সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে গলসি থানার পুলিশ। ঘটনার পর সুনন্দার বাড়িতে ভাঙচুর হয়। গণ্ডগোলের জেরে তাঁর বইপত্তর এমনকি অ্যাডমিট কার্ড খোয়া যায়। ফলে, তাঁর পরীক্ষায় বসা এক সময় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পরিবারের সকলেই জেলে। ডুপ্লিকেট অ্যাডমিট কার্ড যোগার করা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে সে। সেই সময়ই এগিয়ে আসেন সাঁকো চন্দ্র শেখর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চক্রবর্তী। সেই স্কুল থেকেই এবার পরীক্ষায় বসছে সুনন্দা। প্রধান শিক্ষকই কাউন্সিল অফিসে দৌড় ঝাঁপ করে ডুপ্লিকেট অ্যাডমিট কার্ড যোগার করে দেন। ডুপ্লিকেট অ্যাডমিট কার্ড পাওয়ার পরও পরীক্ষায় বসা নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হয়নি সুনন্দার। বইপত্তর নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তার নিরসনে এগিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক এবং জেলার কৃপাময় নন্দী। তাঁরাই বই যোগার করে দেন। পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মিশনের কয়েকজন শিক্ষিকা তাকে নিয়মিত পড়িয়েছেন। সুনন্দা বলে, গ্রেপ্তারের পর আদৌ পরীক্ষায় বসতে পারব কীনা তানিয়ে চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু, প্রধান শিক্ষক এবং জেলার আমাকে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মনোবলও যুগিয়েছেন। প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। এখানে সবাই আমাকে উৎসাহিত করেছে। আর মিশনের শিক্ষিকাদের পাশাপাশি সবনম দিদি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে দারুণ সাহায্য করেছে। আশা করি রেজাল্ট ভালোই হবে। আর প্রধান শিক্ষক বলেন, সুনন্দা পড়াশুনায় ভালো। ফল ভালোই করবে। ওর জন্য যে টুকু করেছি তা ছাত্রীর প্রতি একজন শিক্ষকের দায়বদ্ধতা থেকেই করেছি। জেলার বলেন, মেয়েটির পড়াশুনায় প্রচন্ড আগ্রহ। ওর ইচ্ছাশক্তি প্রবল। মেয়েটি পরীক্ষায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করা মাত্রই উদ্যোগ নিই।

Exit mobile version