পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৬ মাস আগে সুপ্রভার সঙ্গে মাধবডিহির ছোট বৈনান হাইস্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রবীর যশের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের একটি ৬ মাসের ছেলে আছে। বিয়েতে পাত্র পক্ষের চাহিদা মতো পণ সুপ্রভার বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তাঁর পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এনিয়ে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য শুরু। তার উপর তাঁর শালোয়ার-কামিজ পড়ার ব্যাপারেও আপত্তি জানায় শাশুড়ি। পড়া বন্ধ করা এবং শালোয়ার-কামিজ না পরার ফতোয়া না মানায় শ্বশুর বাড়িতে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সেখানে তাঁকে মাঝে মধ্যেই মারধর পর্যন্ত করা হত। তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বাপের বাড়িতে জানানোয় দুটি পরিবারের মধ্যে আলোচনায় বসাও হয়। কিন্তু, তাতেও অত্যাচার কমেনি। এমনকি স্থানীয় সালিশির পরও সুপ্রভার উপর অত্যাচার বন্ধ হয়নি।
কয়েকদিন ধরেই তাঁর উপর অত্যাচার সীমা ছাড়ায়। ক্ষোভে, দুঃখে দিন তিনেক খাওয়াও বন্ধ করে দেন তিনি। বুধবার সকালে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর তিনি চা এবং মুড়ি খেতে যান। সেই সময়ই শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাঁর হাত থেকে মুড়ির বাটি ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে দেয়। এর পরই স্বামী এবং শ্বাশুড়ি তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। হাতের কাছে থাকা ফল কাটার ছুরি নিয়ে স্ত্রীর শরীরে এলোপাথারি কোপ বসিয়ে দেয় প্রবীর। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সুপ্রভা। সেই অবস্থাতেই মা পূর্ণিমা এবং ছেলেকে নিয়ে চম্পট দেয় প্রবীর। পরে জামালপুর থানার মশাগ্রামে তাকে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই তাকে মেমারি হাসপাতালে ভরতি করে দেয়। মৃতার শ্বশুর জয়দেব যশ অবশ্য বাড়িতেই রয়েছে। অসুস্থতার কারণে সে পালাতে পারেনি। খবর পেয়ে মাধবডিহি থানার পুলিশ দেহটি তুলে ময়না তদন্তে পাঠায়।