E Purba Bardhaman

জোড়া সিপিএম নেতা খুনের ঘটনায় চার্জশিট থেকে তিনজনের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে ফের তদন্তের নির্দেশ দিল সিজেএম আদালত

Pradip Ta & Kamal Gayenবর্ধমান, ২৫ মার্চঃ- বর্ধমানে জোড়া সিপিএম নেতা খুনের ঘটনায় চার্জশিট থেকে তিনজনের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে ফের তদন্তের নির্দেশ দিল বর্ধমানের সিজেএম আদালত। যে সব অফিসার আগের তদন্ত প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে নতুন অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে। সি আই ডি -র পুলিশ সুপারকে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১১ জুন এবিষয়ে রিপোর্ট পেশের জন্য সি আই ডি -র পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফের তদন্তের জন্য কেস ডায়েরিও সি আই ডি -র পুলিশ সুপারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম সেলিম আহমেদ আনসারি। চার্জশিট থেকে বাদ যাওয়া তিন জনের বিষয়ে নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেরও উল্লেখ করেছেন সিজেএম। আদালতের এই নির্দেশের ফলে সি আই ডি-র তদন্ত প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ল বলে আইনজীবীদের একাংশের মত। সেই আইনজীবীদের মতে, সি আই ডি তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এরই মাঝে তিনজনের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে সিজেএম আদালত নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার অর্থ, সি আই ডি -র তদন্তে কার্যত অনাস্থাই প্রকাশ করা। সি আই ডি যে ঠিকমতো তদন্ত করেনি তা আদালতের রায়েই স্পষ্ট। যদিও চার্জশিট থেকে নাম বাদ যাওয়া তিনজনের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, মৃতের পরিবারের তরফে এনিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল। তাছাড়া একটি জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট তিনজনের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে সিজেএমকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। তার পরিপেক্ষিতেই সিজেএম আদালত সি আই ডি -কেই তদন্তের  নির্দেশ দিয়েছে। এর থেকে স্পষ্ট সি আই ডি তদন্তেই আস্থা রয়েছে আদালতের।

     পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান শহরের উপকন্ঠে দেওয়ান দিঘি এলাকায় পার্টি অফিসের সামনেই খুন হন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা এবং জেলা নেতা কমল গায়েন। অভিযোগ, এলাকা দখল করতেই তৃণমূলের লোকজন দুই সিপিএম নেতাকে পিটিয়ে মারে। ঘটনার বিষয়ে মৃতের ভাই প্রবীর তা সেদিনই বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনার দিনই চার জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নেমে সি আই ডি এফ আই আর-এ নাম থাকা আরও সাত জনকে গ্রেপ্তার করে। সি আই ডি-র হোমিসাইড বিভাগের ইন্সপেক্টর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্ত শেষ করে গত বছরের ৯ মে আদালতে চার্জশিট পেশ করেন। এফ আই আর-এ নাম থাকা ২২ জনের মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার। তার মধ্যে ৮ জন আরও অধরা। এফ আই আর-এ নাম থাকলেও প্রয়াত কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ তা-র জামাতা তাপস কুমার গুপ্ত, তাপস বাবুর ছেলে সাহেব গুপ্ত এবং টাকি হাজরা ওরফে সিদ্ধেশ্বর হাজরার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেন তদন্তকারী অফিসার। ঘটনার দিন ওসময়ে প্রাণী সম্পদ দপ্তরের কর্মী তাপস বাবু, আই সি ডি এস কর্মী সিদ্ধেশ্বর বাবু তাঁদের অফিসে এবং সাহেব কলকাতার বাগুই আটি -র বাড়িতে ছিলেন বলে জানিয়ে দেন তদন্তকারী অফিসার। যদিও তিনজনের নাম চার্জশিট থেকে বাদ যাওয়া নিয়ে আপত্তি জানান কেসের অভিযোগকারী। এনিয়ে আদালতে পিটিশনও জমা দেন। প্রবীর বাবুর আইনজীবী কমল দত্ত বলেন, সি আই ডি যে ঠিকমতো তদন্ত করেনি তা এই রায়েই পরিষ্কার।

Exit mobile version