নিখোঁজ ছাত্রের বাবা সন্তোষ বাগ জানিয়েছেন, গত প্রায় দেড় বছর ধরে সৌমেন টিবি রোগে ভুগছেন। এর আগে তাঁর বিভিন্ন চিকিৎসা হয়েছে। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১১ মার্চ তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন সন্তোষ বাবুও। গত ১২ মার্চ বিকালবেলায় সন্তোষ বাবু হাসপাতালের ৬ তলা ভবন থেকে নিচে নেমে আসেন একটি দরকারে। এরপর তিনি নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন সৌমেন তাঁর বেডে নেই। এর পরই তিনি হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডের নার্স, চিকিৎসক সহ অন্যান্য কর্মীদের কাছে তাঁর ছেলের ব্যাপারে বলতে গেলে তাঁকে অপমানিত হতে হয় বলে জানিয়েছেন সন্তোষ বাবু। ওইদিনই ছেলে বাড়ি ফিরে যেতে পারে এই সন্দেহে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু, ছেলে না ফেরায় তিনি ফের পরের দিন হাসপাতালে গিয়ে খোঁজখবর নেন। কিন্তু, পাওয়া যায় নি। ওইদিনও তাঁকে অপমানিত হতে হয়। সন্তোষবাবু জানিয়েছেন, এরপর তিনি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিকের অফিসে গিয়ে গোটা বিষয়টি জানালে জনৈক এক কর্মী তাঁকে জানান, ডট চিকিৎসায় যে বিশেষ ধরণের ওষুধ দেওয়া হয় সেই ওষুধ খাওয়ার পর রোগীর বিকার দেখা দিতে পারে। এমনকি মানষিক ভারসাম্যও হারাতে পারেন রোগী। পরপর কয়েকদিন ধরে হন্যে হয়ে ছেলেকে খুঁজেও কোনও সন্ধান না পাওয়ায় শুক্রবার তিনি হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ছেলেকে খুঁজে পেতে দ্বারস্থ হয়েছেন বর্ধমান থানার কাছেও।
এদিকে, এই অভিযোগ সম্পর্কে এদিন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, আজই হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প, টিবি ওয়ার্ড এবং রোগীর পরিবারের কাছ থেকে এই ধরণের একটি খবর পেয়েছি। ১২ তারিখ থেকে সৌমেন বাগ নামে এক রোগী নিখোঁজ। টানা ৩-৪ দিন ধরে কোনও রোগীর ওয়ার্ডে খোঁজ না পাওয়া গেলে আমাদের কাছে খবর আসে। আমরা তারপর থানায় নিখোঁজ ডাইরি করি। আজ আমি জানতে পেরেই থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ আগে জানা সত্ত্বেও আমাদের জানায়নি। রোগীকে সুস্থ করতে প্রতি টিবি রোগী পিছু সরকার দেড় লাখ টাকা খরচ করে, তা সত্ত্বেও কেন রোগী পালাল তা খতিয়ে দেখা হবে। এটা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে।
বর্ধমান থানার আই সি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েই রোগীর সন্ধান পেতে আমরা খোঁজ চালাচ্ছি। হাসপাতালের আইন শৃঙ্খলা ঠিক রাখা, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়া সহ বেশ কয়েকটি কাজের জন্য হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প। কোন রুগী পালিয়ে যাচ্ছে এটা আমাদের দেখা সম্ভব নয়। এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেখার দায়িত্ব। হাসপাতাল নিজের দায়িত্ব পালন না করে, পুলিশ আগে জানত বলে নিজেদের নিজেদের দোষ চাপা দিতে চাইছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর অভিযোগ পেলে তখন আমাদের দায়িত্ব ।