E Purba Bardhaman

হাসপাতালের শৌচাগারের বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তৃণমূল নেতাকে জেলাশাসকের ভৎর্সনা

বর্ধমান, ১৩ ফেব্রুয়ারিঃ- বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শৌচাগারের বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়লেন জেলাশাসক। প্রকাশ্যেই বেশ কিছুক্ষণ দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি চলে। বিরোধী দলনেতাকে প্রকাশ্যে ভৎর্সনা করে দমানোর চেষ্টা করেন জেলাশাসক। কিন্তু, তাতে না দমে হাসপাতালের শৌচাগারের বেহাল অবস্থা নিয়ে তাঁর বক্তব্যে অনড় থাকেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা। শেষমেশ ক্ষোভে অনুষ্ঠান স্থল ছেড়ে চলে যান জেলাশাসক। পরে অবশ্য তিনি ফিরে আসেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা এবং জেলাশাসক প্রকাশ্যে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ায় হাসপাতাল চত্বরে আলোড়ন পড়ে যায়।Burdwan Medical College & Hospital-a MRI Unit & Fair Price Medic

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালু হল এম আর এই স্ক্যান এবং ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক, আই এম এ -র রাজ্য সভাপতি তথা বিধান সভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য নির্মল মাঝি, জামালপুরের বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক, রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা আধিকারিক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক ওঙ্কার সিং মীনা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনদের বসার ব্যবস্থা ছিল শিশু বিভাগের একটি ঘরে। সেই ঘরটির পাশেই রয়েছে শৌচাগারটি। সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ফুটো পাইপ লাইন থেকে জল ঘরটির মেঝেয় চলে আসছিল। শৌচাগারটিও জলময় হয়ে যায়। এনিয়ে জেলা শাসকের সামনেই হাসপাতালের সুপার অসিত বরণ সামন্তকে প্রশ্ন করেন সমীর বাবু। কথাবার্তা চলাকালীনই সুপারকে আড়াল করতে উদ্যোগী হন জেলাশাসক। এধরনের প্রশ্ন প্রকাশ্যে তোলায় পুরসভার বিরোধী দলনেতাকে জেলাশাসক পাল্টা দু’কথা শুনিয়ে দেন। তাতে না দমে সমীর বাবুও জেলাশাসককে পাল্টা দু’কথা শোনান। এরপরই ক্ষোভে সেখান থেকে চলে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দেন জেলাশাসক। পরে কৃষিমন্ত্রী সহ অন্যান্য আধিকারীকদের অনুরোধে ফের উদ্বোধন স্থলে আসেন জেলাশাসক। এর কিছুক্ষণ পরই উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে মেডিকেল কলেজে হওয়া সভায় জেলাশাসককে আবার দেখতে পাওয়া যায়না। সভাস্থলে আসার জন্য মাইকে জেলাশাসককে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়। কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটকও ফোন করে জেলাশাসককে অনুষ্ঠান স্থলে আসার জন্য অনুরোধ করেন। শেষমেশ বেশ কিছুক্ষণ পর জেলাশাসক মঞ্চে এসে বসেন। পরে সমীর বাবু বলেন, হাসপাতালের বেহাল অবস্থা নিয়ে মামুষের স্বার্থে কথা বলেছি। আমি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। তাছাড়া আমি হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেখানে অযথা মন্তব্য করেন জেলাশাসক। সরকারী আধিকারীক, জনপ্রতিনিধি এবং মন্ত্রীদের ওই ধরনের দুর্গন্ধময় ঘরে বসার ব্যবস্থা করে অপমান করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমি তার প্রতিবাদ করেছি মাত্র। হাসপাতালের সুপার এবং জেলাশাসক পরে এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

    উল্লেখ্য, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ১০৩ টি সুইপার পদ শূন্য আছে। ফলে স্ক্যাভেঞ্জিং কাম চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের দিয়ে এই সুইপারের কাজ করাতে হচ্ছে। জানা গেছে, সুইপার এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের মোট প্রায় ২০০ টি পদ শূন্য রয়েছে। আর সেই কারণেই হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার কাজে মাঝেমধ্যেই এই ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। এদিন সমীরবাবু যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক হলেও এদিনের এই অনুষ্ঠানের মাঝে তা তিনি প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় এদিন হাসপাতাল কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়টি তিনি পরেও বলতে পারতেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অনেক কর্মীই।

Exit mobile version