বর্ধমান, ১৯ মার্চঃ- আগামী আর্থিক বছর থেকেই মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পে জেলার সমস্ত পঞ্চায়েতে চালু হতে চলেছে ই-মাষ্টাররোল। আরও স্বচ্ছতা এবং পুরোপ্রক্রিয়ায় গতি আনতে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ম্যানুয়াল মাষ্টার রোল বাতিল করে চালু হতে চলেছে কম্পিউটারাইজড্ এই ব্যবস্থা। বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কারসিং মীনা জানিয়েছেন, এই ই-মাষ্টার রোল ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে আগামী ১ এপ্রিল থেকেই। ইতিমধ্যেই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই ব্যবস্থার মধ্যে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সমস্যা দেখা দিয়েছে কয়েকটি ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে। বেশ কয়েকটি এলাকায় বি এস এন এল-এর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা ঠিকভাবে মিলছে না। প্রথম দফায় পরীক্ষামূলক ভাবে এই রকম ১০ টি ব্লক অফিস ও গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভি-স্যাট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম দফার তালিকায় রয়েছে, জামুরিয়া, খন্ডঘোষ, কেতুগ্রাম-১, আউশগ্রাম-২, মঙ্গলকোট ব্লক অফিস এবং অগ্রদ্বীপ, খন্ডঘোষের লোধনা, মেমারীর বিজুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ওই সমস্ত এলাকায় বি এস এন এল-এর ব্রডব্যান্ড পরিষেবা ঠিক না থাকায় ভি-স্যাট প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই পরিষেবা চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে চলতি আর্থিক বছরেও বর্ধমান জেলা গোটা ভারতের মধ্যে শীর্ষস্থানে অবস্থান করেছে। তিনি জানিয়েছেন, গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত ৪৫৩.০২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এই সময়কালের মধ্যে পাওয়া গেছে ৪৬০.৩৪ কোটি টাকা। ১৫ মার্চ পর্যন্ত ২ কোটি ২৪ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি করা গেছে। এই প্রকল্পে জল সংরক্ষণ ও জল সঞ্চয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১৭৫৪ টি, কাজ চলছে ৩৩৭৪ টি; পুকুর সংস্কার হয়েছে ২১০৯ টি, কাজ চলছে ২৫৯০ টি; ক্ষুদ্র সেচের কাজ হয়েছে ৪৩৬ টি, কাজ চলছে ৫২৪ টি; খরা প্রতিরোধের কাজ হয়েছে ৬৫২ টি, কাজ চলছে ২০৪০; বন্যা প্রতিরোধের কাজ হয়েছে ৬২০ টি, কাজ চলছে ১১১১ টি। এছাড়া মোট ২০৯০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের ১৯০১ টি রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, কাজ চলছে মোট ৯১৩২ কি.মি. দৈর্ঘের ২৮৪৯ টি রাস্তার। এই ১০০ দিনের কাজের বনসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩ লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছে। এই সময়কালের মধ্যে ৫ লক্ষ ৯৭ হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পে যুক্ত করা গেছে বলে এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মোট খরচকৃত টাকার মধ্যে ৩০৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে মজুরী বাবদ। এছাড়াও মোট শ্রমদিবসের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৫ শতাংশ মহিলা কাজ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ সন্তোষজনক ভাবেই চলছে। গড়ে ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা খরচ করেছে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত। কোনও কোনও গ্রাম পঞ্চায়েত ৯ কোটি টাকাও এই প্রকল্পে খরচ করেছে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন।