গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফের বিস্তর প্রচার সত্ত্বেও কেবলমাত্র পূর্ব বর্ধমানেই লাগাতার পথ দুর্ঘটনায় চিন্তার ভাঁজ পড়ল জেলা প্রশাসনের কাছে। শনিবার বিকালেই বর্ধমান শহরের রেলওয়ে ওভারব্রীজের চারখাম্বা এলাকায় বেপরোয়া বাসের গতির বলি হন এক গৃহবধু। আর তারপরেই রবিবার সকালে গলসী থানার পুরষার কাছে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন একই পরিবারে দুজন। রবিবার সকালে মেদিনীপুরের হলদিয়া টাউনসিপ থেকে একই পরিবারের ৩ সদস্য একটি প্রাইভেট গাড়ি করে দুর্গাপুর যাচ্ছিলেন। গলসীর পুরষা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল প্রায় ১০টা নাগাদ দুর্গাপুরের দিকে যাবার পথে ২নং জাতীয় সড়কে সামনে আচমকাই একটি সাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে এই প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কন্টেনারের পিছনে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা সহ গলসী থানার পুলিশ। আহতদের ৪ জনকেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিত্সক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে রয়েছে শ্যাম প্রধান (৪৫) এবং তাঁর স্ত্রী গীতা প্রধান(৩৮)। বাড়ি হলদিয়া টাউনসিপে। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন শ্যাম প্রধানের মেয়ে রিমি প্রধান (১৯) এবং গাড়ির চালক তপন মান্না (৩৮)। তপনবাবুর বাড়ি মেদিনীপুরের খেজুরি থানার রামচক এলাকায় হলেও বর্তমানে তিনি হলদিয়া টাউনসিপেই থাকতেন বলে জানা গেছে। শ্যাম প্রধানের ছেলে দুর্গাপুরে কোনও হোষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। হলদিয়া থেকে দুর্গাপুর ছেলের কাছেই যাচ্ছিলেন প্রধান পরিবারের সদস্যরা।
গলসী থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় আহত হন সাইকেল আরোহী তারেক হোসেন(৫০)। তাঁর বাড়ি পুরষা গ্রামে। তিনিও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। আহত তারেক হোসেন মল্লিক জানিয়েছেন, এদিন সকালে মাঠে কাজ সেরে তিনি পুরষা গ্রামে ফিরছিলেন। সেই সময় আচমকাই একটি গাড়ি দ্রুতবেগে তাঁর সামনে চলে আসে। এরপর আর তাঁর কিছু মনে নেই। এদিকে, এই ঘটনার পরই গলসী থানায় ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। জানা গেছে,তিনি দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা ঘুরেও দেখেন।