বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান শহরের গুডস্শেড রোডে ঘর ভাড়া নিয়ে অফিস বানিয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চলছিল। বেকার ছেলে-মেয়েদের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে চাকরির জন্য অফিসে ডেকে পাঠানো হচ্ছিল। চাকরির জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ নেওয়া হচ্ছিল টাকা। সংস্থায় নাম লিখিয়ে কারও চাকরি হয়নি। টাকাও ফেরত পাননি সংস্থায় নথিভূক্ত বেকাররা। মঙ্গলবার রাতে অফিসে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিস। কিছু নথিপত্রও পুলিস বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অরিৎ কুমার দাস ওরফে অভিজিৎ, শুভদীপ দাস ও অজয় ঘোষ। বর্ধমান থানার ঘোরদৌড়চটি এলাকায় প্রথমজনের বাড়ি। বর্ধমান থানারই নলা গ্রামে শুভদীপের বাড়ি। দেওয়ানদিঘি থানার বাঘাড়ে অজয়ের বাড়ি। অরিৎ সংস্থাটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। বাকিরা সংস্থার কর্মী। বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতদের আইনজীবী বলেন, মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসানো হয়েছে। সংস্থাটি চাকরি দেয়না। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির খোঁজখবর দেয়। যদিও সরকারি আইনজীবী নারদ কুমার ভূঁইঞা বলেন, ধৃতরা চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত। বহু বেকার ছেলে-মেয়ে সংস্থার দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে ধৃতদের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা।
পুলিস জানিয়েছে, হুগলির শ্রীরামপুর থানার চাতরার বাসিন্দা অন্নদাশঙ্কর দাস শনিবার একটি মেসেজ পান। তাতে তাঁকে চাকরির জন্য সংস্থার অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ইন্টারভিউয়ের পর তাঁর চাকরি হবে বলে জানানো হয়। আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র তাঁকে আনতে বলা হয়। সেইমতো সোমবার তিনি বর্ধমানে আসেন। যে নম্বর থেকে তাঁকে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল তাতে ফোন করেন তিনি। তাঁকে বর্ধমান স্টেশনে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পর স্কুটিতে চেপে এক যুবক আসে। অন্নদাশঙ্করকে স্কুটিতে বসিয়ে গুডসশেড রোডের অফিসে আনা হয়। এরপর তাঁর কাছ থেকে নথিপত্র জমা নেওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকে ৩ হাজার ৫৭০ টাকা জমা নেওয়া হয়। কিছু কাগজে তাঁর বুড়ো আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে টাকা ফেরত চান অন্নদাশঙ্কর। তাঁকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনকে জানান তিনি। মঙ্গলবার তিনি ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস।