মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মেমারী থানার অভিযানে পর্দা ফাঁস হল এক প্রতারণা চক্রের। গ্রেপ্তার ৩ পান্ডা। গোপনসূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মেমারী বাসস্ট্যাণ্ড এলাকা থেকে মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের নাম নির্মল রায়, মলিন দাস ও গোপাল শর্মা। তাদের বাড়ি যথাক্রমে ব্যারাকপুর, কল্যাণী ও চাকদা এলাকায়। জানা গেছে, থরে থরে সাজানো নোটের বান্ডিল নিয়ে আচমকাই টার্গেটের কাছে হাজির হতেন প্রতারকরা, তারপরই শুরু হত টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার গল্প। এরপরই সুযোগ বুঝে গহনা হাতিয়ে চম্পট দিত প্রতারকদের দল। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, নোটের বান্ডিলের উপরে ও নিচে ১০০ ও ৫০০ টাকার আসল নোট ও ভিতরে নকল টাকা সাজিয়ে বান্ডিল তৈরি করে প্রলোভন দেখিয়ে সুযোগ বুঝেই গহনা হাতিয়ে চম্পট দিত এই চক্রের পান্ডারা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতারকরা মূলত গহনা পরা মহিলাদেরই টার্গেট করতো। প্রথমে একজন প্রতারক সোনার গহনা পড়া কোনো মহিলাকে টার্গেট করে মহিলার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতেন। এর কিছুক্ষণ পর অন্য আরোও একজন প্রতারক দলের সদস্য গিয়ে নোটের বান্ডিলগুলি কুড়িয়ে পেয়েছি কিন্তু তিনি এই বান্ডিলটি নিয়ে কি করবেন বুঝতে পারছেন না, যদি কেউ খুঁজতে আসে দিয়ে দেবেন বলে তাদের হাতে নকল নোটের বাণ্ডিলগুলো দিয়ে কিছুটা দুরে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এরপরই আরো এক প্রতারক তাঁর হারিয়ে যাওয়া টাকা খুঁজতে এলে তারা টাকা না পাওয়ার বাহানা করতেন। এরপরই যে প্রতারক টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার গল্প ফেঁদে টাকা দিয়েছিলেন তিনি এসে বলতেন, টাকা খুঁজতে এলেন দিলেন না। প্রতারকরা মহিলাকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে টাকাগুলো ভাগাভাগি করার জন্য বলতেন। এমনকি মহিলার বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার বাণ্ডিলগুলি মহিলার ব্যাগে রাখা হতো। পাশাপাশি মহিলাকে তারা গহনা ছিনতাই হয়ে যাবার ভয় দেখিয়ে গহনাগুলি খুলে ব্যাগে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিত। এরপরই সুযোগ বুঝে মহিলার গহনাভর্তি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিত প্রতারকরা। সমগ্র জেলাজুড়েই সক্রিয় ছিল এই প্রতারণা চক্র। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরনের প্রতারণার খবর আসছিল। এরপরই গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মেমারি বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায় পুলিশ। ৩ ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রতারণার কথা স্বীকার করে নেয়। বুধবার ধৃতদের পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে। এই চক্রের সঙ্গে আরোও কেউ জড়িত আছে কিনা তার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।