হাটগোবিন্দপুরে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষ, আহত ৩০, আটক ১০
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-রবিবার রাতে বৈকুণ্ঠপুর ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব ব্যানার্জ্জীর বাড়িতে বিজেপির বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। জয়দেববাবুর অভিযোগ, রবিবার রাতে তাঁর বাড়িতে ব্যাপক ইঁট ছোঁড়া হয়। ভাঙচুর করা হয় তার জানালা দরজাও। তাঁর অভিযোগ বিজেপিই এই হামলা চালিয়েছে। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফল। অন্যদিকে, সোমবার দুপুরে তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে জয় শ্রীরাম সম্বোধনে দুই বন্ধু নিজেদের মধ্যে মিলিত হওয়ার ঘটনায় বিজেপি এবং তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুর এলাকা। দু পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, এদিন দুপুরে হাটগোবিন্দপুর বাজারে তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে দুই বিজেপি কর্মীর দেখা হয়। একে অপরকে জয় শ্রীরাম বলে সম্বোধন করেন। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল পার্টি অফিসে থাকা তৃণমূল সমর্থকরা বেড়িয়ে এসে তাঁদের জয় বাংলা বলার জন্য চাপ দিতে থাকে। তারা তা না করায় তাদের মারতে মারতে তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢোকানো হয়। সেখানে গামছায় মুখ ঢেকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূলের হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে তাঁরা বর্ধমান –কালনা রোডে বসে পড়ে। বিজেপির অভিযোগ, রাস্তা অবরোধ করায় ফের তৃণমূল সমর্থকরা বিজেপি সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়। ফের তাদের মারধর করা হয়। এরপরই দুপক্ষ ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তৃণমূলের অভিযোগ, এরপরই বিজেপির সমর্থকরা তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে বেপরোয়া ভাঙচুরও করে। এদিকে, খবর পেয়ে শক্তিগড় থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ ১০জন বিজেপি সমর্থককে আটক করে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হল গলসি ১ নং ব্লকের পোতনা পুরসা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামপুর গ্রাম। গ্রামে হরি নাম সংকীর্তন কারা করবে তা নিয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। দুপক্ষের পাঁচ জন জখম হয়। আহতরা হলেন সঞ্জীব ঘোষ, রতন ঘোষ, নব ঘোষ এবং উত্তম ঘোষ। আহতরা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাকির গোষ্ঠীর সমর্থক বলে জানা গেছে। অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পার্থ মণ্ডলের অনুগামীরা আচমকা হামলা চালায়। তলোয়ার দিয়ে সঞ্জীব ঘোষ-এর থুঁতুনি কেটে দেওয়া হয়। রতন ঘোষের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা মারে গুরুতর জখম হন সুভাষ ঘোষ। তিনি পার্থ মণ্ডল গোষ্ঠীর সমর্থক বলে জানা গেছে। গ্রামে হরিনাম সংকীর্তন করার জন্য জাকির গোষ্ঠীর লোকজন হরিনাম তলায় আলোচনায় বসে ছিলেন। এই সময় ব্যাপক বোমাবাজি করা হয়। যদিও এব্যাপারে পার্থ মণ্ডল জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে তিনি মোটেও জড়িত নন। হরিনাম সংকীর্তন কারা করবেন তা নিয়েই গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। অন্যদিকে, তৃণমূল কর্মীর খড়ের পালুইয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গলসী এক নম্বর ব্লকের উচ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের বন সুজাপুর গ্রামে। ওই গ্রামের তৃণমূল সমর্থক অপা রায় এর ভাই উদয় রায় জানান, রবিবার রাতে কে বা কারা তাদের পালুইয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। তিনি জানান, সিপিএম থেকে বিজেপিতে গিয়ে কিছু লোক গ্রামে অশান্তি করছে। কয়েকদিন আগে তাদের বাড়িতে এসে তাঁর বাবার কাছে অপা রায়কে তৃণমূল ছাড়ার হুমকি দিয়ে যায়। তারপর রবিবার রাত্রি আটটার সময় তাদের বাড়ির পাশে খামারে একটি খড়ের পালুইয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে আসেন। দুটি পাম্প লাগিয়ে দেড়- দুই ঘন্টা প্রচেষ্ঠায় আগুনে নিয়ন্ত্রণে আনে গ্রামবাসী। ততক্ষণে আগুনে ভষ্মিভূত হয়ে পুড়ে নষ্ট হয়ে যায় খরের পালুইটি। পাশে থাকা একটি জল তোলা পাম্পশেটেও আগুনে আংশিক পুড়ে যায় বলে জানান তিনি। ওই ঘটনায় ক্ষয় ক্ষতির পরিমান ষাট হাজার টাকা বলে তার অনুমান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাঁর দাদা অপা তৃণমূল করার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপি আশ্রিত কিছু সিপিএম এর সমর্থক। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে গলসির থানার পুলিশ। ঠিক কি কারনে ঘটছে ওই ঘটনা তার তদন্ত করছে পুলিশ। তবে বিজেপি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।