E Purba Bardhaman

৩০০ জন সমর্থক গ্রামছাড়া হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিজেপির জেলা অফিসে, অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে

300 supporters fled from the village and took shelter in the BJP's district office

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও যখন গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে লাগাতার অশান্তি সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসসেই সময় খোদ বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে তৃণমূলের সন্ত্রাসে প্রায় ৩০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে গেরুয়া শিবির দাবি করেছে। আর তাঁদের সামনে রেখেই বিজেপির পাল্টা অভিযোগবিজেপি নয়গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়েই সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল আর দোষ চাপাচ্ছে বিজেপির ওপর। শনিবার বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিজেপির জেলা নেতা গৌতম ভট্টাচার্য সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেনঅবিলম্বে যদি রাজ্যের শাসকদল এই সন্ত্রাস বন্ধ না করে এবং একইসঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসন যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বিজেপি বাধ‌্য হবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিতে। গৌতমবাবুর অভিযোগনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই আউশগ্রামভাতারখণ্ডঘোষ সহ একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। তিনি জানিয়েছেনসদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হওয়ায় এবং বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে বিজেপি উল্লেখযোগ্যভাবে ভোট পাওয়ায় হিংস্র হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসকদল। তিনি জানিয়েছেন,ভোটের ফলাফল পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসে ভাতার থানার এরুয়াররামপুরদেবপুরমাদারডিহিশ্রীপুরনবাবনগর প্রভৃতি এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানগোবিন্দ অধিকারীর নেতৃত্বে হামলা চালানো হচ্ছে। শুক্রবার নবাবনগরে বিজেপি কর্মী রতন বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। তৃণমূলী হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি রতন বিশ্বাসের পুত্রবধূ জ্যোত্স্না বিশ্বাসরতন বিশ্বাসের স্ত্রী পারুল বিশ্বাসও। পারুল বিশ্বাসকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিজেপির ভাতার ৩২নং মণ্ডল কমিটির সভাপতি কৃষ্ণদাস সিংহ জানিয়েছেনএই সমস্ত ঘটনার বিষয়ে ভাতার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি দোষীদের গ্রেপ্তার করারও উদ্যোগ নেয়নি। শনিবারও নবাবনগরে হামলা চালায় তৃণমূল সমর্থকরা। গৌতম ভট্টাচার্য জানিয়েছেনলোকসভার গণনার দিন আউশগ্রামের তকিপুরে বিজেপি কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয়। সেখানে কয়েকটি দোকানে আগুন লাগানোও হয়। উল্টে বিজেপি সমর্থক ৪জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সম্প্রতি তাঁরা জামিন পেয়ে গ্রামে ফেরেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে ফের আগাম অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তুলে গুসকরা বিট হাউসের পুলিশ ওই ৪জনকেই গ্রেপ্তার করে। গৌতমবাবু জানিয়েছেনকেন ওই ৪জন বিজেপি সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হল এদিন বিজেপি সমর্থকরা তাই জানতে গুসকরা বিট হাউসে গেলে পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে। গৌতমবাবু জানিয়েছেনপরপর এই ঘটনায় বিজেপির জেলা কমিটি আলোচনা করছে। ইতিমধ্যেই এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবরআগামী সপ্তাহেই দিল্লী থেকে ফিরছেন বর্ধমান- দুর্গাপুরের সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিং অহলুবালিয়া। তারপরেই এব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। অন্যদিকেএব্যাপারে ভাতারের তৃণমূল নেতা মানগোবিন্দ অধিকারীর সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকেভাতারের তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল জানিয়েছেনবিজেপি সমর্থকদের ওপর হামলা বা তাঁদের ঘরছাড়া হয়ে থাকার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বরং বিজেপিই তৃণমূল সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এদিকে,বিজেপি জেলা কার্যালয়ে ২৩ মে ভোটগণনার পর থেকেই তৃণমূলের হাতে আক্রান্তদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। বিজেপির এক জেলা নেতা জানিয়েছেনএখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০জন ঘরছাড়াগ্রামছাড়া হয়ে এই আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন। অত্যাচারিত মহিলারা জানিয়েছেনশুধু তৃণমূল নেতারাই নয়পুলিশও রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসাচ্ছে। তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই পার্টি অফিসে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।

Exit mobile version