বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে বালির ই-চালান তৈরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে খণ্ডঘোষ থানার পুলিস। ধৃতদের নাম লায়েক আজাহার উদ্দিন, মির আবু সিদ্দিক, শেখ সরফুদ্দিন ওরফে মনোজ ও শেখ মণিরুল হোসেন। খণ্ডঘোষ থানার খেজুরহাটিতে আজাহারের বাড়ি। খণ্ডঘোষ থানারই কেশবপুরে সিদ্দিকের বাড়ি। রায়না থানার জোতসাদি গ্রামে মণিরুলের বাড়ি। বর্ধমান শহরের লস্করদিঘি এলাকায় সরফুদ্দিনের বাড়ি। ধৃতদের কাছ থেকে ১৬টি ভুয়ো ই-চালান বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে পুলিসের দাবি। এছাড়াও ধৃতদের ৪টি মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতরা সরকারের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে দীর্ঘদিন ধরে নকল ই-চালান তৈরি করে বালির অবৈধ কারবারে মদত দিচ্ছিল। মোটা টাকার বিনিময়ে তারা ই-চালান বিক্রি করছিল। নিজেরা ফুলে-ফেঁপে উঠলেও তাদের এই কারবারের ফলে সরকারি রাজস্বের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছিল। ঘটনার বিষয়ে জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে থানা। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। আরও ই-চালান উদ্ধার এবং চালান তৈরিতে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করতে ও চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে ধৃতদের ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতদের ৪ দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে জাল ই-চালানে বালি পাচার করা হচ্ছিল। বেশকিছু ই-চালান বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। কিউআর কোড পরীক্ষা করে জানা যায়, সেগুলি জাল। এরপরই পুলিস নড়েচড়ে বসে। কোথা থেকে জাল ই-চালান তৈরি করা হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজখবর শুরু হয়। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, আজাহারউদ্দিন ও সিদ্দিক এই চক্রে জড়িত। বৃহস্পতিবার বিকেলে খেজুরহাটি বাজার থেকে আজাহারউদ্দিন ও সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করা হয়। দু’জনের কাছ থেকে ১২টি ই-চালান বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেগুলি জাল বলে নিশ্চিত হয় পুলিস। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জাল ই-চালান তৈরিতে সরফুদ্দিন ও মণিরুলের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিস। এরপরই ধৃত দু’জনকে নিয়ে পলেমপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালায় পুলিস। সেখান থেকেই অপর দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আরও ৪টি ই-চালান বাজেয়াপ্ত হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে, তারা সরকারের নামে একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলেছে। অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ব্যবহার করে নকল ই-চালান তৈরি করে তা চড়া দামে বালির কারবারিদের বিক্রি করেছে।