E Purba Bardhaman

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা তালিকায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ৭ জন ছাত্রছাত্রী

3rd - Sukriyo Chakraborty (496) - Burdwan Municipal High School - Higher Secondary Examination Result

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক রাজ্যের নিরিখে স্থান পাওয়া কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সিংহভাগেরই লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া। সম্প্রতি মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবার পরও দেখা গেছে অধিকাংশ কৃতি ছাত্রছাত্রীরাই ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চেয়েছেন। আবার উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের পরও সিংহভাগ ছাত্রছাত্রীই জানিয়েছেন, তাঁরা চান ডাক্তার হতে। এদিকে, সোমবার প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে রীতিমত নজীর গড়ল বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুল। মাধ্যমিকের ফলাফলে গোটা বর্ধমানকে চমকে দিয়েছিল বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাইস্কুল। দুজন ছাত্রী রাজ্যের মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিল। আর উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে বর্ধমান শহরের নামজাদা স্কুল মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুলেরই ৪জন ছাত্র ১ থেকে ১০-এর মধ্যে স্থান ছিনিয়ে নিল। যদিও এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় এই স্কুলের কেউই স্থান না পাওয়ায় হতাশার মধ্যে পড়েছিলেন শিক্ষিক থেকে অভিভাবকমহল। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে রাজ্যের মেধা তালিকায় এই স্কুল থেকেই ৪জন ছাত্র নিজেদের স্থান দখল করে নেওয়ায় খুশীর হাওয়া স্কুল জুড়ে। এবছর এই স্কুল থেকে মোট ২৯৯ জন ছাত্র পরীক্ষা দিয়েছিল। তার মধ্যে ২৯৪জন পাশ করেছে। আর এরই মধ্যে রাজ্যের মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে ৪জন। সুক্রিয় চক্রবর্তী ৪৯৪ পেয়ে তৃতীয়, পুষ্পেন্দু খাঁ ৪৯১ পেয়ে পঞ্চম স্থান, দেবজ্যোতি পাল ৪৮৮ পেয়ে অষ্টম স্থান এবং সাগর চন্দ ৪৮৬ পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছে। এছাড়াও এবার বর্ধমান শহরের বিদ্যার্থী গার্লস স্কুলের ছাত্রী সুনন্দা মণ্ডলও ৪৮৬ পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছে। মেমারী বিদ্যাসাগর ইনষ্টিটিউশন ইউনিট ১-এর ছাত্র অর্ধেন্দুমৌলী ঘোষ ৪৯০ পেয়ে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে। এছাড়াও আউশগ্রামের শ্রেয়া দাস রামনগর হাইস্কুল থেকে ৪৮৮ পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। রাজ্যের মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান পাওয়া সুক্রিয় চক্রবর্তী মাধ্যমিকে আইসিএসসি বোর্ড থেকে রাজ্যে দ্বিতীয় এবং সর্বভারতীয় স্তরে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল। সুক্রিয় জানিয়েছে, তার ইচ্ছা বেসিক সায়েন্সের কেমিষ্ট্রি বা বায়োলজি নিয়ে গবেষণা করা। যদিও বাবা-মার ইচ্ছা ডাক্তারী নিয়ে পড়াশোনা করা। পুষ্পেন্দু খাঁ জানিয়েছে সে ডাক্তার হতে চায়। ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছে। সোস্যাল মিডিয়াকেও সে ব্যবহার করেছে। পড়াশোনার কাজে রীতিমত হোয়াটস্ অ্যাপকেও সে ব্যবহার করেছে। হুগলীর দক্ষিণ রসুলপুর হাইস্কুল থেকে ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে ১৯তম স্থান পায়। হুগলীর মধুপুরে বাড়ি হলেও কেবলমাত্র ডাক্তারী পড়ার টানেই বর্ধমানে পিসেমশাইয়ের বাড়িতেই একাদশ শ্রেণী থেকে পড়াশোনা করেছে সে। পদার্থবিদ্যা ভাল লাগলেও তাঁর ইচ্ছা ডাক্তার হওয়া। উচ্চমাধ্যমিকে তার ছিল ৯জন গৃহশিক্ষক। অষ্টম স্থান পাওয়া দেবজ্যোতি পাল জানিয়েছে, তার লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া। মাধ্যমিকে ১২তম স্থান পেয়েছিল সে। তার এই সাফল্যে খুশী তার বাবা মায়ের পাশাপাশি ঠাকুর্দা এবং ঠাকুমাও। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলের ছাত্র বিশেষ সক্ষম হিসাবে রাজ্যে প্রথম স্থান পাওয়া এবং মেধা তালিকায় দশম স্থান পাওয়া সাগর চন্দের ইচ্ছা রসায়ন নিয়ে ভবিষ্যতে গবেষণা করা। মাধ্যমিকে ২ নম্বরের জন্য দশম স্থান পায়নি সে। দ্বাদশ স্থান পেয়েছিল সে। বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সুনন্দা মণ্ডল এবারে রাজ্যের মেধা তালিকায় দশম স্থান পেয়েছে। সুনন্দা চায় ভবিষ্যতে পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে। বাবা সুভাষ মণ্ডল ভেটেরেনারী চিকিত্সক। মা বাসন্তি মণ্ডল গৃহবধু। মেমারীর অর্ধেন্দুমৌলী ঘোষও চায় ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে। আউশগ্রামের রামনগর স্কুলের ছাত্রী শ্রেয়া দাস কলা বিভাগে পড়াশোনা করে রাজ্যের মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করায় গোটা এলাকায় খুশীর হাওয়া। শ্রেয়া জানিয়েছে সে চায় ভবিষ্যতে অধ্যাপিকা হতে। উল্লেখ্য, সোমবার ছিল আইআইটি জেইই এ্যাডভান্স স্তরের পরীক্ষা। বর্ধমানের অধিকাংশ কৃতিই এই পরীক্ষায় বসার জন্য কোয়ালিফাই করেছে।

Exit mobile version