Site icon E Purba Bardhaman

তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে হামলা ও বোমাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার ৯ বিজেপি কর্মী

9 BJP workers arrested for attack on Trinamool Congress party office

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রায়না থানার নতু গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো এবং কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও বোমাবাজির ঘটনায় ৯ বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতদের নাম ঝন্টু খুলি, মহাদেব পাকড়ে, প্রভাত ঘড়ুই, উদয় সাঁতরা, মলয় ঘড়ুই, মনসা সাঁতরা, তাপস মালিক, ভরত পাকড়ে ও সুভাষ ঘড়ই। রায়না থানার নতু গ্রামে কুটি পাড়ায় তাদের বাড়ি। শনিবার রাতে বাড়ি থেকে পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় সাঁতরা পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ৫ জন মহিলাও রয়েছে। পুলিস ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি ভাঙা চেয়ার, বাঁশ, লাঠি ও ফাটা বোমার অংশ বাজেয়াপ্ত করেছে। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ঝন্টু, উদয় ও প্রভাতকে ৭ দিন নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতদের হয়ে আইনজীবী কমল দত্ত জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। তাদের মারধর করা হয়েছে। আর পুলিস শাসকদলের পক্ষ নিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। সরকারি আইনজীবী নূপুর দাস আগরওয়াল পুলিসি হেপাজতের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। ৩ জনকে ৪ দিন পুলিসি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম রঞ্জনী কাশ্যপ। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে ৩০ আগস্ট ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯ টা নাগাদ সঞ্জয় গ্রামের রাস্তা ধরে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা লোহার রড, বাঁশ, কাটারি, শাবল প্রভৃতি নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। তৃণমূল পার্টি করার জন্য তাকে মারধর করে। মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে তাকে পেটানো হয়। কোনও রকমে তিনি পালিয়ে বাঁচেন। এরপর বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা নতু বাস স্ট্যাণ্ডে তৃণমূলের পার্টি অফিসে চড়াও হয়। সেখানে তখন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ছিলেন। পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি লুটপাট চালানো হয়। তৃণমূলের পতাকা ছিড়ে দেওয়া হয়। পার্টি অফিসে থাকা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয়। মারধরে সুকুমার কাঁড়ি নামে এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন। পার্টি অফিসের টিভি ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে পালায় হামলাকারীরা। এরপর বোমাবাজি করতে করতে তারা চলে যায়। যাওয়ার সময় পথে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সুপ্রিম সরকার, তৃণমূল কর্মী বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বিজেপির হামলাকারীরা। বিজেপি অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের দাবি, কয়েকজন স্থানীয় যুবক তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে একটি বাড়ির বারান্দায় বসে গল্প গুজব করছিল। বিজেপি সমর্থক ভেবে তৃণমূলের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। তারই পাল্টা হিসাবে গ্রামের পুরুষ ও মহিলারা একজোট হয়ে তৃণমূলের পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি বিজেপির। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শৈলেন সাঁই বলেন, রায়নায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। আমাদের কর্মী সঞ্জয়ের উপর প্রথম হামলা চালায় বিজেপির লোকজন। পরে আমাদের পার্টি অফিসে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

Exit mobile version