E Purba Bardhaman

বর্ধমান পুলিস লাইন থেকে রহস্যজনকভাবে পুলিস কর্মী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অপহরণের মামলা রুজু

A case of kidnapping was filed in connection with the disappearance of police personnel from Burdwan police line

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান পুলিস লাইনে মেজর অফিস থেকে এএসআই সুদীপ কুমার ঘোষের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শেষমেশ অপহরণের মামলা রুজু হল। ঘটনার বিষয়ে ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। বর্ধমান থানার এক অফিসার বলেন, এএসআইয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়। সিট এনিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু, এএসআইয়ের হদিশ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে এএসআইয়ের স্ত্রী শ্রাবণী ঘোষ হাইকোর্টে মামলা করেন। তার ভিত্তিতে হাইকোর্ট কেস রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেইমতো মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান কোর্টের জিআরও অফিস থেকে বদলি করা হয় সুদীপবাবুকে। তাঁকে এসপির অফিসে হাজির হতে বলা হয়। এসপি অফিস থেকে বকেয়া কাজ মেটানোর জন্য তাঁকে পূর্বস্থলী থানায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, তিনি পূর্বস্থলী থানার আইসির কাছে রিপোর্ট করেন নি। তাঁকে পূর্বস্থলী থানার পাটুলিতে একটি পরিত্যক্ত ঘরে মদ্যপ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিস তাঁকে উদ্ধার করে পূর্বস্থলী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁকে পুলিস লাইনে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরেরদিন সকালে পুলিস লাইনে রোলকলের সময় তিনি গরহাজির ছিলেন। তারপর থেকেই তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। পুলিস লাইন থেকে তাঁকে ফোন করা হয়। কিন্তু, তিনি আসবেন না বলে জানিয়ে দেন। তার কিছুক্ষণ পর থেকেই তাঁর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর স্ত্রী ১ মার্চ বর্ধমান থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। তার ভিত্তিতে খোঁজখবর শুরু হয়। এএসআইয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন থানায় খবর পাঠানো হয়। সিআইডির মিসিং পার্সন ব্যুরোকেও বিষয়টি জানানো হয়। তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন বের করার চেষ্টা করে পুলিস। কিন্তু, তাঁর হদিশ পাওয়া যায়নি।
মোবাইলের সূত্র ধরে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, মোবাইল বন্ধ থাকায় তা সফল হয়নি। বিভিন্ন হাসপাতালে ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে খোঁজখবর চালায় পুলিস। যদিও তাঁর হদিশ মেলেনি। নিখোঁজ এএসআইয়ের হদিশ পেতে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এসডিপিওর নেতৃত্বে সিট বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর চালায়। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতেও খোঁজখবর নেয় সিট। বেলুড় মঠ ও নরেন্দ্রপুর আশ্রমেও যান সিটের অফিসাররা। সিটের সদস্যরা মুর্শিদাবাদের বেলাডাঙা, বহরমপুর, মালদহ টাউন, দক্ষিণেশ্বর এবং দমদমের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নিখোঁজ এএসআইয়ের খোঁজ চালায়। সব জায়গাতেই খালি হাতে ফিরতে হয় সিটের অফিসারদের।

Exit mobile version