E Purba Bardhaman

পুজো হোক, উৎসব নয়, বন্ধ হোক কার্নিভাল – দাবিকে সামনে রেখে মুখোমুখি মানবী কনভেনশন

A convention was organized in Burdwan with the demand "Puja, not festival, stop carnival".

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- দুর্গাপুজো হোক আচারনিষ্ঠা মেনে, কিন্তু কোনো উৎসব নয়। এমনকি দুর্গা কার্নিভালও বাতিল করা হোক। রবিবার বর্ধমান লায়ন্স ক্লাবের সভাঘরে মানবী-অর্ধেক আকাশ এই সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত মুখোমুখি মানবী কনভেনশনে এই দাবিতেই সোচ্চার হলেন সবাই। রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্যা শিখা আদিত্য সরকার জানিয়েছেন, আর জি কর কাণ্ডের ঘটনায় তাঁরা আর ঘরের কোণে বসে থাকতে পারেননি। জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের রাস্তায় বার করে এনে দিয়েছেন। বিবেকের তাড়নায় তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন সুবিচার চাইতে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো নারীর ওপর অত্যাচার না হয় – তার নিশ্চয়তার দাবিতেই তাঁরা লড়াই করছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো আমাদের ট্রাডিশান। তা বন্ধ করা হবেনা। পুজো হোক আচার নিষ্ঠা মেনে। কিন্তু উৎসব নয়। কারণ তাঁরা ভারাক্রান্ত। তাঁরা উৎসবের আমেজে মেতে উঠতে পারছেন না। একইসঙ্গে তাঁরা চান এবছর দুর্গা কার্নিভাল বন্ধ করা হোক। তিনি জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই এই দাবিকে সামনে রেখে তাঁরা গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু করেছেন। আগামী ৩ অক্টোবর তাঁরা পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে এই দাবিতে স্মারকলিপি দিতে চলেছেন। একইসঙ্গে সমস্ত পুজো কমিটি থেকে শুরু করে বিধায়ক, জনপ্রতিনিধিদের কাছেও আবেদন রাখছেন এবারের পরিস্থিতি কখনই উৎসব পালনের উপযুক্ত নয়, তাই উৎসব থেকে বিরত থাকুন। মাইক, ডিজে বাজিয়ে উল্লাস বন্ধ করুন। এদিন এই কনভেনশনে অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন জুনিয়র ডাক্তার থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সকরাও। হাজির ছিলেন রেডিওলজিষ্ট ডা. মৃণালকান্তি ঘোষ, প্রবীণ চিকিৎসক গীষ্পতি চক্রবর্তী, চোখের ডাক্তার অশোক মজুমদার, লেখিকা রত্মা রসিদ ব্যানার্জ্জী, ডা. সুবর্ণ গোস্বামী প্রমুখরাও। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডা. মৃণালকান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, ২০১১ সালের পর থেকে নতুন কলম্বাসের উদ্ভব হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন সেক্টর থেকে তোলাবাজি করছেন, থ্রেট কালচার থেকেও টাকা লুটছেন। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাঁর দাবি, ২০১১ সালের আগে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তাররা নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করতেন। কিন্তু এখন আলোচনা করাতেও থ্রেট কালচার। করা যাবে না। একটা দমবন্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর এই পুঞ্জীভূত ক্ষোভের মুখেই ঘটেছে আরজিকর কাণ্ডে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করার ঘটনা। আগুনে ঘি পড়েছে। তাই সমাজের সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। তবে মশাল জ্বেলে, মোমবাতি নিয়ে মিছিল করলেই হবে না। আমাদের মেরুদণ্ডটাকে সোজা রাখতে হবে। আর প্রত্যেকেই যদি তা করতে পারি তবেই সমাজ থেকে এই নতুন কলম্বাস উৎখাত হবে।

Exit mobile version