E Purba Bardhaman

বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে জোড়া নালিশ

A double complaint has been lodged with the Election Commission against Burdwan South MLA Khokan Das

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোটের মুখে এবার বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে জোড়া অভিযোগ দায়ের হল। সোমবারই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইট করে নির্বাচন কমিশনের কাছে খোকন দাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার এবং নির্বাচনের দিন তাঁর ওপর নজরদারি রাখার আবেদন জানিয়েছেন। শুভেন্দুবাবু ট্যুইট করে বলেছেন, খোকন দাস দলীয় একটি মিটিংয়ে বলেছেন ভোটের দিন ভোটারদের বুথ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে তাদের টিএমএসির অনুকূলে ভোট দেওয়ানো করাবেন। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বর্ধমান শহরের ৩৩নং ওয়ার্ডে তৃণমূলের এক কর্মীসভায় বিধায়ক খোকন দাস বলেন, একটা দিন আপনারা মানুষের জন্য কাজ করুন। সমস্ত ভোটারকে নিয়ে তৃণমূলের বাক্সে ভোট দিন। সমস্ত ভোটগুলোকে তৃণমূলে দিন। সেদিন আপনি কী খেলেন না খেলেন সেটা বড় কথা নয়। আপনাকে ভাবতে হবে একদিন আমি কষ্ট করবো, সারা বছর আমি ভালো থাকবো। আমি সবাইকে ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে জোড়া ফুলে ভোট দেবো। এখানে যাতে অন্য কেউ ভোট না পায়। অন্য কেউ ভোট না পায়। সিপিএম ৩৪ বছরে বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করেছে। তাঁরা আবার স্বপ্ন দেখছে আমরা আসবো। কোনোদিন আসবে না। ওরাই তো বিজেপিকে নিয়ে এলো। ওদের ভোটগুলো দিলো বলেই ৭৪ টা আসন পেলো বিধানসভায়। বিজেপি ৭৪ টা বিধায়ক পেতো? সিপিএম-এর সব ভোট বিজেপিতে দিয়েছে। তাই ৭৪ টা সিট পেয়েছে। আর ভারতের ইতিহাসে কলঙ্ক বিধানসভায় সিপিএম-কংগ্রেসের একটাও বিধায়ক নেই। শুধু বিজেপিকে হাওয়া দিতে গিয়ে আজ নিজেদের দল ধরাশায়ী। এখন বুঝতে পারছে এরকম করলে হবে না। আবার আমাদের দাঁড়াতে হবে। তাই বাড়িবাড়ি গিয়ে বলছে মাসিমা আপনি তো আমাদের সিপিএম-ই ছিলেন, এবার সিপিএম-এ ভোট দেবেন। আরে বাবা মাসিমা ১৩ বছর আগে সিপিএম ছিলেন। ১৩ বছরে মাসিমা এত কাজ পেয়েছেন, এত উন্নয়নের কাজ দেখেছেন এখন বলছেন আর সিপিএমের দরকার নেই তৃণমূলই আছে, তৃণমূলই থাকুক। তোমরা যেমন আছো সেইরকম থাকো, আমরা তৃণমূলের সঙ্গে থাকি। কীর্তি আজাদকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে হবে। কারণ সাংসদ কোটায় প্রতি সাংসদ পিছু ৫ বছরে ২৫ কোটি টাকা পাওয়া যায়। সেই টাকায় আমরা শহরের অনেক কাজ করতে পারবো। মমতাজ সংঘমিতা ছিলেন আমরা অনেক কাজ করেছি। শেষ ৫ বছর বিজেপির সাংসদ রয়েছেন উন্নয়নের কাজ তো দূরের কথা তাঁকেই কেউ দেখতে পাননি। তাই তাঁকে পাঠিয়েছে আসানসোল, আর মেদিনীপুরে যে কাজ করেননি সেই দিলীপ ঘোষকে পাঠিয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুরে। এর শুধু বড়বড় ডায়ালগ দিয়ে প্রতিদিন সাংবাদিকদের কাছে ভেসে থাকতে চায়। সাংবাদিকদের টাকা দেয় আর সাংবাদিকরা পিছন পিছন ছুটে বলে আমার সঙ্গে তো লোক নেই তোমরা প্রতিদিন আমার সব দেখাও। কোনও সময় ত্রিশূল নিয়ে ঘুরছে, কোনও সময় গদা নিয়ে ঘুরছে, কোনও সময় খিচুড়ি খাওয়াচ্ছে চলে যাচ্ছেন। এসব করে টিভি চ্যানেলে থাকতে চাইছেন। মানে আমাকে যাতে মানুষ দেখেন। মানুষ তো নেই, লোক তো নেই। পাগল একটা লোক। যে লোকটাকে বিজেপির চিকিৎসা করানো দরকার। তাঁকে চিকিৎসা না করে ওকে পাঠিয়েছে টিকিট দিয়ে। বলেছে যাও তুমি বিদায় হয়ে আসো। লোকসভা হবে আর তুমি ঘরে ঢুকে যাবে। রাহুল সিনহা-সহ বড়বড় নেতা যেমন ঘরে ঢুকে গেছেন। দিলীপ ঘোষও ভোটের পরে ঘরে চলে যাবে। অনেক ত্রিশূল, গদা নিয়ে ঘুরেছি। বর্ধমানের মানুষ ত্রিশূল, গদায় আর ভোট দিলেন না। বর্ধমানের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিলেন তাই আমি হেরে গেলাম। এদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি ওই সভাতেই খোকন দাস সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে যে কথা বলেন, তা নিয়ে পৃথকভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন সাংবাদিক গণেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনকে লেখা অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, ভোটের সময় খোকন দাস সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে যে কথা বলেছেন তার তদন্ত করা হোক। বিধায়কের বক্তব্যের সত্যতা থাকলে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অপমানজনক ও উসকানিমূলক কথা বলায় খোকন দাসের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এদিকে, এব্যাপারে সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এব্যাপারে খোকন দাসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি এধরণের কোনো কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে।

Exit mobile version