বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এমনিতেই মাঠ সমস্যায় ভুগছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। মূলত রাধারানি স্টেডিয়ামের মাঠে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল, ক্রিকেট লিগের খেলা হয়। এছাড়াও অ্যাথলেটিক্সের প্রতিযোগিতার আয়োজনও হয় রাধারানি স্টেডিয়ামের মাঠে। মাঠ সমস্যার কারণে সময়মতো ক্রিকেট, ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু করতে পারে না ক্রীড়া সংস্থা। ক্রিকেট খেলা হয় বর্ষায়। আর ফুটবল মরসুম শেষ হয় শীতে। মাঠ সমস্যার সমাধানে প্রথম ডিভিশন ফুটবল লিগের খেলা গতবছর মেমারির স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছে। ফুটবলে চারটি ডিভিশন রয়েছে। ক্রিকেটে রয়েছে তিনটি ডিভিশন। ক্রিকেট লিগ এখন মাঝপের্ব। ফুটবলের কিছু খেলা স্পন্দন স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়। স্পন্দনের মাঠে সবুজ ধ্বংস করে হতে চলেছে মেলা। মেলার প্যান্ডেলের জন্য মাঠের বিভিন্ন জায়গায় গর্ত খুঁড়ে বাঁশ বাঁধার কাজ চলছে। এককথায়, মেলার আয়োজন করতে গিয়ে মাঠের দফারফা করা হচ্ছে। এনিয়ে শহরের ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সবুজ ধ্বংস করে, খেলার মাঠের বারোটা বাজিয়ে মেলার আয়োজন করা নিয়ে ক্রীড়া মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতোমধ্যেই জেলা কংগ্রেসের নেতা গৌরব সমাদ্দার বিষয়টি জানিয়ে জেলাশাসককে ই–মেল পাঠিয়েছেন। ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট সচিব শিবশঙ্কর ঘোষ বলেন, বাম আমলে খেলার মাঠে মেলার আয়োজন নিয়ে আমরা সরব হয়েছি, আন্দোলন করেছি। এখনও সেই স্ট্যান্ড থেকে সরছি না। খেলার মাঠে মেলার আয়োজনের তীব্র বিরোধিতা করছি। খেলোয়াড়দের সংগঠিত করে আন্দোলনে নামতেও পিছপা হব না।
বর্ধমানে মেলার আয়োজনের জন্য উৎসব ময়দান রয়েছে। সেখানে সারাবছর বিভিন্ন মেলা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। স্পন্দন স্টেডিয়ামে লিগ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন হয়। বহু স্কুলের বাির্ষক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও আয়োজিত হয় স্পন্দনের মাঠে। এই মাঠেই আগামী ১ মার্চ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত চলবে ‘সৃষ্টিশ্রী মেলা’। সোমবার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে বাঁশ বাঁধার কাজ চলছে। বাঁশ বাঁধার জন্য বড় বড় গর্ত খোঁড়া হয়েছে মাঠের মধ্যে। স্পন্দন মাঠের আলাদা ঐতিহ্য রয়েছে। রাজ আমলে এখানে ফুটবল, হকি, ক্রিকেট লিগের খেলা হতো। সেসময় মাঠের নাম ছিল ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড। পরবর্তীকালে মেলা, সার্কাস আয়োজনের ফলে ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডের মাঠ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে খেলার আয়োজন বন্ধ হয়ে যায়। বাম আমলে বিকল্প জমি দিয়ে ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নিয়ে নেয় সরকার। পরে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য মাঠ ব্যবহারের এবং দেখভালের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। খেলার আয়োজনই মাঠ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডের নাম পরিবর্তন করে হয় স্পন্দন। সেখানে স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হয়। ক্রীড়া সংস্থা সেখানে নিয়মিত ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ক্রীড়া সংস্থার সচিব পীরদাস মণ্ডল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। মেলা আয়োজনের বিষয়ে ক্রীড়া সংস্থাকে কিছু জানানো হয়নি।