E Purba Bardhaman

ফুটবলের টানে বিশ্বকাপ খেলা দেখতে কাতারে বর্ধমানের ক্রীড়াপ্রেমীরা

A large number of sports lovers from Burdwan are going to Qatar to watch the Football World Cup

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কথায় আছে সখের দাম লাখ টাকা। আর লাখ টাকা খরচ করেই বর্ধমান থেকে কয়েক হাজার কিমি দূরে মরুভূমির দেশ কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে রওনা হলেন বর্ধমানের ফুটবলপ্রেমীরা। ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল’। হুজুগে বাঙালি নয়, ফুটবল পাগল মানুষজন কাতারে পাড়ি দিচ্ছেন। গাঁটের কড়ি খরচ করে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে হাজির হচ্ছেন। হতে পারে হুজুগে বাঙালি। কিন্তু এই বাঙালিরা সত্যিই ফুটবল পাগল। না হলে মাথাপিছু প্রায় ২ লক্ষ টাকা করে খরচ করে শান্তব্রত চৌধুরী, চিরঞ্জীব সেন, শ্যামল রায়, সাগ্নিক রায়, সংকেত রায় ওরফে জিকোরা ছুটছেন কাতারে। গোটা বিশ্ব এখন ফুটবল জ্বরে কাবু। ভারত আদপেই কোনোদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে পা রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। এতবড় দেশ ভারত কেন এখনও ২২ জন খেলোয়াড় তৈরী করতে পারল না – চায়ের কাপে তুফান উঠছেই। কিন্তু তারই মাঝে একদল রবিবার কাতার থেকে ফিরেছেন বর্ধমানে। আর সোমবার আর একদল রওনা দিলেন কাতারের উদ্দেশ্য। বর্ধমান শহরের রাধানগর পাড়ার বাসিন্দা ফুটবলপ্রেমী শ্যামল রায়, টাউনহল পাড়ার চিরঞ্জীব সেন, বাদামতলার শান্তব্রত চৌধুরীরা প্রায় এক সপ্তাহ কাতারে কাটিয়ে ফিরেছেন বর্ধমানে। তাঁরা চারটে বিশ্বকাপের খেলা দেখেছেন। শ্যামল রায় জানিয়েছেন, এনিয়ে তাঁর এটি দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলা দেখার সুযোগ হ’ল। এর আগের রাশিয়া বিশ্বকাপেও গেছিলেন। আর এবার গেলেন দোহায়। অবশ্যই যাবার সময় চাল, ডাল ইত্যাদির রসদ নিয়ে গেছিলেন। নিজেরাই রান্না করে খেয়েছেন। শ্যামলবাবু বলেছেন, মরুভূমিকে যে এভাবে তৈরী করা যায় তা কাতারে না গেলে বোঝা যেত না। যথেষ্ট উন্নতি করেছে কাতার। মরুভূমিতে বড় বড় স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে যা চোখে না দেখলে অবিশ্বাস্য মনে হবে। ওখানে ১৪ লেনের রাস্তা তৈরি হয়েছে। কাতারে প্রচুর বাংলাদেশী বাস করেন। ভারতেরও অনেকেই আছেন। ফলে বাংলা ও হিন্দি ভাষার অনেক মানুষকেই পাওয়া গেছে। তাই এবার তাদের আটদিনের বিশ্বকাপ যাত্রায় তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। এদিকে, বাবা শ্যামল রায় রবিবার বাড়ি ফিরতেই তাঁর দুই ছেলে সহ মোট ৬জনের একটি তরুণ দল সোমবার রওনা দিলেন দোহার উদ্দেশ্যে। তারা কাতারে পাঁচটি ম্যাচ দেখবেন।  জিকো বলেন, তিনি ব্রাজিলের সমর্থক। তার লাগেজে ব্রাজিলের পতাকা আছে যেমন, তেমনি ভারতীয় পতাকা ও মোহনবাগানের পতাকাও আছে। তবে তার আক্ষেপ ব্রাজিলের খেলা দেখবেন কিন্তু নেইমারের খেলা দেখতে পাবেন না। আবার জিকোর ভাই সাগ্নিক রায়ের ফেবারিট আর্জেন্তিনা। কিন্তু তারা যে টিকিট পেয়েছে তাতে আর্জেন্তিনার কোনো খেলা তারা দেখতে পাবে না। কিন্তু এই আক্ষেপকে সরিয়ে রেখেও যাবার আগে রীতিমত উত্তেজিত এই তরুণ ফুটবল প্রেমীরা। উল্লেখ্য, শ্যামল রায় বা তাঁর ছেলেরা প্রত্যেকেই বর্ধমানের ফুটবল খেলোয়াড়। একসময় চুটিয়ে তারা খেলেছে। শুধু তাইই নয়, শ্যামলবাবুদের গোটা পরিবারই ফুটবল পাগল বলে পরিচিত। বাড়ির নামও খেলাঘর। ব্যবসাক্ষেত্রেও রয়েছে মেসির ছবি। শ্যামল রায় জানিয়েছেন, একটা বিষয় খারাপ লেগেছে তাঁর। ওখানকার লোকজন তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছে, কেন এসেছেন আপনারা এখানে। আপনাদের দেশ তো ফুটবল বিশ্বকাপে খেলছে না। শুধু ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা -এছাড়া আর কোনও উত্তর দিতে পারেননি শ্যামল রায়।

A large number of sports lovers from Burdwan are going to Qatar to watch the Football World Cup

Exit mobile version