জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান) :- এক প্রসূতির মৃত্যুতে জামালপুরের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, নার্সিংহোমে সময়মতো চিকিৎসা করা হয়নি। বারবার বলার পরও নার্সিংহোমের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ঘটনার বিষয়ে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করল বর্ধমান থানা। মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করিয়েছে পুলিস। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জামালপুর থানার আঝাপুরের রিম্পা ক্ষেত্রপাল (২০) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মঙ্গলবার কাড়ালাঘাটের একটি নাির্সংহোমে ভির্ত হন। বুধবার সিজার করে তাঁর দু’টি সন্তান বের করা হয়। প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে বেডে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর অস্ত্রপচারের জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ পর নার্সিংহোমের নার্স ও এক স্বাস্থ্যকর্মী প্রসূতিকে দেখে যান। তাঁরা কিছু ব্যবস্থা নেন। যদিও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। এরপর নাির্সংহোম কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেয়। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি তাঁকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রিম্পার বাবা ঝন্টু ক্ষেত্রপাল বলেন, মেয়েকে বেডে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর সিজারের জায়গা থেকে রক্ত বের হতে থাকে। বিষয়টি বহুবার নাির্সংহোম কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু, নাির্সংহোম কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দীর্ঘক্ষণ কার্যত বিনা চিকিৎসায় মেয়েকে বেডে ফেলে রাখা হয়েছিল। অনেক পরে হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স ক্ষতস্থানে পট্টি দিয়ে দেয়। তারপরও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে নাির্সংহোম থেকে মেয়েকে হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলে মেয়েকে মরতে হত না। বাচ্চা দু’টি অনাথ হয়ে গেল। নাির্সংহোমের গাফিলতিতেই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব। নাির্সংহোমের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় তারজন্য যতদূর যেতে হয় যাব। নাির্সংহোমের এক কর্মী মহম্মদ আজিজ ফোনে বলেন, গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। রক্তক্ষরণের বিষয়টি জানার পরই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। চিকিৎসকও প্রসূতিকে দেখেন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রসূতিকে হাসপাতালে রেফার করা হয়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট মিললেই সবকিছু বোঝা যাবে।