বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আমানতকারীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মেমারি থানার পুলিস। ধৃতের নাম গোকুলানন্দ ঢালি। মেমারি থানার মহেশডাঙার ১ নম্বর কলোনিতে তার বাড়ি। বুধবার সকালে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। টাকা আত্মসাতের কথা ধৃত কবুল করেছে বলে পুলিসের দাবি। টাকা আত্মসাতে তার স্ত্রী শর্মিষ্ঠা ঢালি ও বোন দেবী ঢালি মিস্ত্রির নাম জড়িয়েছে। আমানতকারীদের জমা করা ২০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি সে হাতিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিস। এদিনই ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। আত্মসাত করা অর্থ উদ্ধারের জন্য এবং বাকি অভিযুক্তদের হদিশ পেতে ধৃতকে ৭ দিন পুলিসি হেপাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ধৃতকে ৬ দিন পুলিসি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা।
পুলিস জানিয়েছে, মেমারি থানার মহেশডাঙায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার (গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র) চালাত গোকুলানন্দ, তার স্ত্রী ও বোন। বহু আমানতকারী সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে টাকা জমা করেন। আমানতকারীদের শংসাপত্রও দেওয়া হয়। মহেশডাঙা ক্যাম্পের উদয়পল্লির চম্পা বিশ্বাস বহু কষ্টে সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা করেন। তাকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি টাকা তুলতে যান। তার নামে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলে ব্যাংক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করেন। নানা অছিলায় দিনের পর দিন তাকে ঘোরানো হয়। একইভাবে মহেশডাঙা ক্যাম্পের মিঠু সরকার সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে ২৯ হাজার ৬৪১ টাকা ব্যাংকে জমা করেন। তিনিও টাকা ফেরত পাননি। মদ ব্যবসায়ী আশুতোষ মল্লিক ১ লক্ষ টাকা সার্ভিস সেন্টারে জমা দেন। তিনিও টাকা ফেরত পাননি। বহু আমানতকারী তাদের জমা রাখা টাকা ফেরত পাননি। চম্পা মেমারি থানায় ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে কেস রুজু করে তদন্তে নামে পুলিস। গ্রেপ্তার এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন করে তিন অভিযুক্ত। তাদের আবেদন খারিজ করে দেন জেলা জজ কেশাং ডোমা ভুটিয়া। টাকা ফেরত না পেয়ে সোম ও মঙ্গলবার আমানতকারীরা সার্ভিস সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে তারা থানাতেও যান। রাতভর বিক্ষোভ চলার পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস মেলে।