বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- “তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, বিজেপিকে ভোট দেননি। এই অপরাধে ক্যান্সার আক্রান্ত এক মুমূর্ষু রোগীকে শংসাপত্র দিল না বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।” এই অভিযোগে ব্যাপক চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, এই খবর পেতেই দুর্গাপুর থেকে বর্ধমান অফিসে এসে নিজেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী করে দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষের মুইধারা গ্রামের বাসিন্দা ওই ক্যান্সার আক্রান্ত অভিযোগ করেছেন, আবেদন করা সত্ত্বেও বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র অফিস থেকে প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডের জন্য তাঁকে শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি তৃণমূল করেন বলে দেওয়া হয়নি সার্টিফিকেট। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। দু’বছর আগে ব্যাঙ্গালোরে সার্জারির পর তাঁর একটি কিডনি বাদ যায়। তার পর থেকেই তিনি টাটা মেমোরিয়ালে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি জমি বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। কেমোর জন্য প্রয়োজন আরও ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু আর্থিক অভাবের জন্য তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডে আবেদনের জন্য বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর অফিসে যান। কিন্তু সেইসময় সাংসদ ছিলেন না। অভিযোগ, সৌমিত্র খাঁ-এর পিএ হৃদয় পাল তাঁকে বলেন আপনারা আমাদের ভোট দেন নি। তাই শংসাপত্র দেওয়া যাবে না। এরপরই শনিবার ওই ব্যক্তি বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কীর্তি আজাদের সঙ্গে দেখা করেন। কীর্তি আজাদ তৎক্ষণাৎ শংসাপত্র ব্যবস্থা করে দেন তাঁকে। এব্যাপারে সাংসদ কীর্তি আজাদ জানিয়েছেন, একজন সাংসদের দল ও ধর্ম দেখার কোনো ব্যাপার থাকে নাকি। তিনি তো সবারই সাংসদ। একজন মুমূর্ষু রোগী তিনি অন্যদল করেন বলে তাঁকে শংসাপত্র না দেওয়া আসলে একটা অমানবিক বিষয়। বিজেপিতে এমনিতেই নেতাদের অবস্থান হাতির দাঁতের মতো। ওরা বলে এক আর করে এক। ক্যান্সার আক্রান্ত জানার পরও একজনকে শংসাপত্র দেওয়া যাবে না জানিয়ে দেওয়া এবং বলে দেওয়া তিনি অন্য দল করেন, অন্য ধর্ম পালন করেন এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও এ ব্যাপারে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ফোনে বলেন, আমার অফিস কয়েকদিন বন্ধ ছিল। কে কোথায় কাকে কী বলেছে জানি না। আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। কালই সার্টিফিকেট দিয়ে দেব। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।