গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্তেশ্বর (পূর্ব বর্ধমান) :- রিজার্ভ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই মন্তেশ্বর থানার মালডাঙা এলাকার একটি বেসরকারি সংস্থা বাজার থেকে আমানত সংগ্রহ করছে। সেই টাকা ঋণ দানে ব্যবহার করছে। সংস্থায় জমা রাখা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না বহু আমানতকারী। টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের নানা মহলে হন্যে হয়ে ঘুরছেন তাঁরা। আমানতকারীদের দাবি, রিজার্ভ ব্যাংক পরিদর্শনে এলে সেখানে টাকা জমা রাখার কথা যেন না বলা হয়, তা প্রচার করছে সংস্থার কর্তারা। টাকা ফেরত না পেয়ে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ জানিয়েছেন আমানতকারীরা। এমনকি রিজার্ভ ব্যাংক ও এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, জমা রাখা টাকা ফেরত চাইতে গেলে তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। সংস্থার কর্তারা টাকা ফেরত দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। এনিয়ে মেমারি থানায় অভিযোগ জানাতে যান চোৎখণ্ড এলাকার বেশ কয়েকজন আমানতকারী। মেমারি থানা অভিযোগ না নেওয়ায় বিষয়টি তাঁরা এসপিকে জানান। এসপি ঘটনার তদন্ত করার জন্য মেমারি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এরপরই কেস রুজু হয়। প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় কেস করে থানা। যদিও মূল অভিযুক্তদের কেউই গ্রেপ্তার হয়নি। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন পূর্ব বর্ধমানের জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিন পাওয়ার জন্য আবেদন করে। সেই আবেদন অবশ্য জেলা জজ সুজয় সেনগুপ্ত খারিজ করে দিয়েছেন। নির্দেশে জেলা জজ জানিয়েছেন, ৩৫ জন প্রতারিত রিজার্ভ ব্যাংকে ঘটনার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। সংস্থায় তাঁরা টাকা জমা দিয়েছেন। সংস্থার তরফে তাঁদের পাসবুক দেওয়া হয়েছে। পাসবুক পুলিশ সিজ করেছে। আবেদনকারীদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত জরুরি। সে কারণে জামিনের আবেদন খারিজ করা হল। প্রতারিতদের আইনজীবী হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অভিযুক্তরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাংক এবং ইডি-কে জানানো হয়েছে। এরপরও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাইকোর্টে মামলা করা হবে।
রিজার্ভ ব্যাংক ও ইডি-কে দেওয়া চিঠিতে ৩৫ জন আমানতকারী জানিয়েছেন, সংস্থাটি ভুল বুঝিয়ে আমানত সংগ্রহ করছে। সংস্থায় টাকা রাখার জন্য প্রচার করছে। তাতে বিশ্বাস করে সংস্থায় টাকা রাখি। যদিও সংস্থার কর্তারা বলছেন, রিজার্ভ ব্যাংক পরিদর্শনে এলে সেখানে টাকা জমা রাখার কথা যেন না জানানো হয়। এতে আমরা অবাক হয়ে যায়। প্রতিবাদ করে টাকা ফেরত চাই। কিন্তু, সংস্থার কর্তারা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। সংস্থার কর্তারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সংস্থাটির রিজার্ভ ব্যাংকের কোনও অনুমোদন নেই। সে কারণে অবৈধভাবে আমানত সংগ্রহের জন্য এবং লোক ঠকানোর জন্য সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যদিও, মেমারি থানার এক অফিসার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও ভাবেই অভিযুক্তদের রেয়াত করা হবে না।