বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- দু’টি বিরল প্রজাতির সজারু পাচারে ধৃতদের হেফাজতে নিল না বনদপ্তর। অথচ, আদালতে পেশ করা রিপোর্টে ধৃতরা ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড ও বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরণের পশু পাচারে জড়িত বলে জানানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ধৃতদের হেফাজতে না নেওয়ায় বন দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সজারু-সহ ধৃত পিন্টু কুমার, গণেশ সাউ ও তরুণ কুমার ঘোষকে সোমবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে মঙ্গলবার ধৃতদের ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন সিজেএম চন্দা হাসমত। সজারু দু’টি হিমালয়ান প্রজাতির বলে দাবি বন দপ্তরের। সে দু’টিকে রমনাবাগান অভয়ারণ্যের পরিবেশে রাখা উপযুক্ত নয় বলে মত পশু বিশেষজ্ঞদের। উদ্ধার হওয়া সজারু দু’টিকে রমনাবাগান অভয়ারণ্যে পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আপাতত রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম। এমনকি যেখানে সজারু দু’টিকে রাখা হবে, সেখানকার ছবি আদালতে পেশ করার জন্য বনদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এ ব্যাপারে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে রেঞ্জারকে।
বনদপ্তর ও আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরা থেকে সজারু দু’টি উদ্ধার করা হয়। সজারু দু’টি ধবধবে সাদা রংয়ের। একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে সে দু’টি রাখা ছিল। সজারু পাচারে জড়িত তিনজনকে আটক করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেয় আরপিএফ। ধৃতদের মধ্যে পিন্টুর বাড়ি পূর্ব দিল্লিতে। গণেশের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে। উত্তর ২৪ পরগণার রাজারহাট গোপালপুরের দেশবন্ধু নগরে তরুণের বাড়ি। ঘটনার বিষয়ে রেঞ্জার কাজল বিশ্বাস অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অ্যাক্টের ২, ৯, ৩৯, ৪৯, ৫০ ও ৫১ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সজারু দু’টি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ২ নম্বর সিডিউলের ১১ নম্বরে নথিভুক্ত বলে বনদপ্তরের দাবি। ধৃতরা দীর্ঘদিন ধরে পশু কেনাবেচায় জড়িত বলে বনদপ্তর জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন পশু কেনাবেচায় জড়িত বলে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে। যদিও ধৃতদের আইনজীবী আশিস কুমার দাস বলেন, আদৌ এটি পাচারের ঘটনা নয়। সজারু দু’টি কেনা হয়েছে। তার কাগজপত্রও আছে।