গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান স্টেশন এলাকায় ৭২ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণের ঘটনার কিনারায় ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) শৌভিক পাত্রর নেতৃত্বে দল গড়া হল। সেই দল কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে তদন্ত করছে। একটি দল হুগলির আরামবাগে গিয়েছে। সেখানে বৃদ্ধা থাকতেন। গত ১০ অথবা ১১ আগস্ট আরামবাগ থেকে বৃদ্ধা বাড়ি থেকে চলে আসেন। বৃদ্ধার আদিবাড়ি হুগলির গোঘাট থানার শ্যাওড়ায়। সেখানেও পুলিস গিয়েছে। আরামবাগে বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে কথাও বলেছে পুলিস। শ্যাওড়া থেকে বৃদ্ধা আরামবাগে আসেন। সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার প্রথম পক্ষের তিন মেয়ে আছে। দ্বিতীয় পক্ষের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মাঝেমধ্যেই বৃদ্ধা বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে পড়তেন। কিছুদিন পর আবার ফিরে আসতেন। সে কারণে বৃদ্ধা নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের তরফে পুলিসকে কিছু জানানো হয়নি। কিভাবে তিনি বর্ধমান স্টেশনে এলেন। তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে, বৃদ্ধার সঙ্গে এখনও ঘটনার বিষয়ে সেভাবে কথা বলতে পারেনি পুলিস। কারণ, বৃদ্ধা ঘটনার বিষয়ে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে এখনও আসেন নি বলে চিকিৎসকরা পুলিসকে জানিয়েছেন। মানসিক ট্রমা কাটিয়ে ওঠার পর ঘটনার বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য চিকিৎসকরা পুলিসকে পরামর্শ দিয়েছেন।
বৃদ্ধাকে ধর্ষণের ঘটনায় এখনও অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। তবে, পুলিস বেশকিছু তথ্য হাতে পেয়েছে। সেই সূত্র ধরে তদন্তে অনেকখানি অগ্রগতি হয়েছে বলে পুলিসের দাবি। খুব শীঘ্রই ধর্ষণে জড়িতের নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা পুলিসের। তদন্তে নেমে পুলিস স্টেশন এলাকার বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। আশপাশের ব্যবসায়ী ও হকারদের সঙ্গে ঘটনার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিস। লোকজনের সঙ্গে কথা বলে কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিস। এরই পাশাপাশি ঘটনার দিন কিভাবে বৃদ্ধা হাসপাতালে পৌঁছালেন তা জানার চেষ্টা করেছে পুলিস। হাসপাতালে বৃদ্ধাকে যখন পৌছে দেওয়া হয়, সেই সময়কার সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিস। বর্ধমানের পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ধর্ষণে জড়িতকে ধরতে ডিএসপির নেতৃত্বে দল গড়া হয়েছে। বৃদ্ধার পরিবারের খোঁজ মিলেছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে। তদন্তে বেশকিছু তথ্য মিলেছে। আশাকরি খুব শীঘ্রই ঘটনার কিনারা করা সম্ভব হবে।
এদিকে, রবিবার সেভ ডেমোক্রেসির প্রতিনিধি দলের বৃদ্ধার সঙ্গে জোড় করে দেখা করা নিয়ে কড়া মনোভাব নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেভ ডেমোক্রেসির প্রতিনিধিরা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাধা এড়িয়ে বৃদ্ধার সঙ্গে জোর করে দেখা করেন বলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর মহলে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিসকেও বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা বলেন, একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনার বিষয়ে পুলিসকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।