বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আঞ্চলিক ভাষাগুলির সঙ্গে স্থানীয় মানুষের যোগাযোগের একটি বিশেষ মাধ্যম হ’ল ‘বার্তালাপ’। একই সঙ্গে তা আবার সরকারের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমগুলির একটি যোগসূত্র গড়ে তোলে। তৃণমূল পর্যায়ের জনজীবনের কাছে পৌঁছে যাওয়াই হ’ল এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বুধবার বর্ধমানে সংবাদ মাধ্যমের জন্য প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি), কলকাতা আয়োজিত বিশেষ কর্মশালা ‘বার্তালাপ’–এর সূচনাকালে এই মন্তব্য করেন পিআইবি, নয়াদিল্লির নির্দেশক ডঃ নিমিশ রাস্তোগী। পূর্ব বর্ধমান জেলার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের জন্যই মূলত আয়োজন করা হয় এই কর্মশালাটির। শ্রী রাস্তোগী তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে পিআইবি’র কাজকর্মের বিষয়টি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন। পিআইবি’র পরিষেবার সাহায্যে সরকারি তথ্য ও সংবাদকে কিভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, সেই বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেন বার্তালাপে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের কাছে।
এদিন এই কর্মশালায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংবাদপত্রগুলির প্রতিনিধিরা ব্যাপক সংখ্যায় সমবেত হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি সম্পর্কে তথ্য পরিষেবার বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে আলোচনা ছিল এদিনের কর্মসূচিতে।
পিআইবি, কলকাতার যুগ্ম অধিকর্তা পার্থ ঘোষ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার সাহায্যে পিআইবি’র তথ্য পরিষেবার বিশেষ দিকটি নিয়ে আলোচনা করেন। পিআইবি ফ্যাক্টচেক সম্পর্কে এক সবিস্তার আলোচনার পরিসরে তিনি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানান প্রচারিত সংবাদের যথার্থতার বিষয়টি পিআইবি’র বিশেষ ব্যবস্থা ও পরিষেবার আশ্রয় গ্রহণের মাধ্যমেই খতিয়ে দেখার জন্য। তাঁর এদিনের বক্তব্যে ‘বার্তাজীবী কল্যাণ’ কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা ছিল অন্যতম বিষয়। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
‘বার্তালাপ’-এ এদিন উপস্থিত ছিলেন সংবাদ মাধ্যম বিশেষজ্ঞ সুদীপ্ত সেনগুপ্ত, বিশিষ্ট সাংবাদিক পুলকেশ ঘোষ এবং প্রবীণ সাংবাদিক পল্লব রায় চৌধুরী ও সুভাষ সাঁই। তাঁরা তাঁদের পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতার দিকগুলি আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেন। ভুয়ো খবর বা বার্তা সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য পুলকেশ ঘোষ উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে আর্জি জানান। শুধু তাই নয়, এ ধরনের মিথ্যা প্রচারের মোকাবিলায় কিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়, তারও একটি চিত্র তিনি তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যের মধ্যে। পিআইবি’র প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কিভাবে একটি ভালো খবর তৈরি করা যায়, তার দিকনির্দেশ করেন সুদীপ্ত সেনগুপ্ত। ডিজিটাল মিডিয়ার আচরণ বিধির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
একদিনের এই কর্মশালায় পিআইবি’র প্রেস রিলিজ, ফটো, তথ্য সম্পর্কিত গ্রাফিক্স এবং অন্যান্য পরিষেবার সুযোগ কিভাবে পিআইবি’র ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি সংগ্রহ ও গ্রহণ করা যায়, সেই বিষয়টিও ব্যাখ্যা করা হয় সাংবাদিকদের কাছে। তাঁদের অবহিত করা হয় পিআইবি’র ফেসবুক পেজটি সম্পর্কেও। হিন্দি, ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা-সহ অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় কিভাবে এক্ষেত্রে ট্যুইটারের সুযোগ গ্রহণ করা যেতে পারে, তার উপরও আলোকপাত করা হয়।
বর্ধমানের ডাক বিভাগের সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট তাপস মালিক এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেন্ডেন্ট শ্রীরাম আচার্য ‘সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা’, ‘ক্রমপুঞ্জিত জমা প্রকল্প’ (রেকারিং ডিপোজিট), ‘পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড’, ‘ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক’, ‘সিনিয়র সিটিজেন স্কিম’, ‘জাতীয় সঞ্চয়পত্র’ (এনএসসি), ‘কিষাণ বিকাশ পত্র’ (কেভিপি), ‘ডাক জীবন বীমা’ (পিএলআই), ‘রুরাল পোস্টাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স’ ইত্যাদি সরকারি কর্মসূচির সাফল্য ও উপযোগিতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন বার্তালাপের মঞ্চে।
জেলার প্রায় ৫০ জন সংবাদ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন এদিনের কর্মশালায়। প্রশ্নোত্তর ও আলোচনার মাধ্যমে তাঁরা কর্মশালাকে সফল করে তুলতে সহযোগিতা করেন। ছ’জন বর্ষীয়ান বার্তাজীবীকে সংবাদ মাধ্যমের উন্নয়নে তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্য পিআইবি’র পক্ষ থেকে সম্মান জানানোর জন্য মনোনীত করা হয়। এদিনের ‘বার্তালাপ’-এর মঞ্চে সন্তোষ দত্ত, পল্লব রায় চৌধুরী, সুভাষ সাঁই এবং তারকনাথ রায়কে সম্মান জানিয়ে স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও সম্মান জানানোর জন্য মনোনীত হয়েছেন বৈদ্যনাথ কোনার ও সত্যনারায়ণ মাজিল্যা।
তথ্যঃ- পি আই বি