খণ্ডঘোষ (পূর্ব বর্ধমান) :- খণ্ডঘোষের একটি প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে সেখানকার এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকায় ওই শিক্ষকের বাড়ি। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তার না করে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। এর জেরে স্কুল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের কাছ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের বিরোধ বাধে। পুলিশের উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশকে মারধর করা হয়। মারধরে কয়েকজন পুলিসকর্মী জখম হন। লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে শ্লীলতাহানি ও পকসো অ্যাক্টের ধারায় মামলা রুজু করেছে থানা। হামলার বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে দুই মহিলা-সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত শিক্ষককে শুক্রবার বর্ধমানের পকসো আদালতে পেশ করা হয়। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ২২ জুলাই ধৃতকে ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন পকসো আদালতের বিচারক বর্ষা বনশল আগরওয়াল। ধৃত শিক্ষকের মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নিের্দশ দিয়েছেন বিশেষ আদালতের বিচারক। এদিনই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিশ। ধৃত ১০ জনকে এদিন সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ২৬ জুলাই ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন সিজেএম।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার টিফিনের সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে তৃতীয় শ্রেণীর ফাঁকা কক্ষে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। পরেরদিন স্কুল খুললে এক মহিলা শিক্ষিকাকে বিষয়টি জানায় ওই ছাত্রী। এরই মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে স্কুলে বিক্ষোভ শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই শিক্ষককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানায় তারা। এতে স্কুলে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ফোন করে খণ্ডঘোষ থানায় জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ করে উত্তেজিত জনতা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে পুলিশ। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে লাঠি, একটি কুড়ুল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরে পুলিশের দেহে থাকা ক্যামেরার ছবি দেখে অভিযুক্তদের মধ্যে ১০ জনকে শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।