বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- যুবকের যৌন লালসার শিকার হলেন এবার ৭০ বছরের এক বৃদ্ধা। ধর্ষণের ফলে গুরুতর জখম হন বৃদ্ধা। তার প্রচুর রক্তপাত হয়। নারকীয় এই ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার ভোরে বর্ধমান ষ্টেশন এলাকায়। গুরুতর জখম ওই বৃদ্ধাকে সংবাদ মাধ্যমের কয়েকজন কর্মীর উদ্যোগে ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। জানা গেছে, অত্যাচারিত ওই বৃদ্ধার বাড়ি হুগলীর শ্যাওড়া গ্রাম এলাকায়। পরিবারের অনেকেই থাকা সত্ত্বেও কেউ তাঁকে না দেখায় তিনি ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষা করেই চালান। প্রায় দিনই তিনি বর্ধমান ষ্টেশনেই রাত কাটান। তাই অন্যান্যদিনের মতই তিনি বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান ষ্টেশনের পার্সেল বিভাগের কাছেই শুয়ে পড়েন। ভোরবেলায় এক যুবক তাঁকে চা খাওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে প্ল্যাটফর্মের পাশে কচুবনে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এমনকি ওই বৃদ্ধার গোপনাঙ্গে রীতিমত পৈশাচিক অত্যাচারও চালানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাঁকে ফেলে রেখেই পালিয়ে যায় ওই যুবক। বেশ কিছুক্ষণ পর ওই বৃদ্ধা রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে উঠে আসেন ষ্টেশনের কাছে একটি মিষ্টির দোকানে। রক্তে তার সারা শরীর ভেসে যেতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নামিয়ে দিয়েই পালিয়ে যায়। সেখান দিয়ে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর পরিবারের লোকজন যাতায়াত করলেও কেউই বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে হাজির হন কর্তব্যরত তিন সাংবাদিক সইফুল হোসেন মল্লিক, সুজাতা মেহেরা এবং সুমিত ভগত। তাঁরাই জরুরী বিভাগের চিকিত্সকের কাছে ওই বৃদ্ধার চিকিত্সার জন্য আবেদন জানান। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ নাসির আহমেদ। কার্যত ৩জন সাংবাদিক এবং পুলিশের উদ্যোগেই এদিন হাসপাতালের চিকিত্সকরা ওই বৃদ্ধার চিকিত্সা শুরু করেন। তাঁকে গাইনী বিভাগে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ একটি সুয়োমোটো কেস রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
বর্ধমান থানার এক অফিসার বলেন, মেডিকেল রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তা বলা সম্ভব নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট মেলার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা বলেন, বৃদ্ধার যৌনাঙ্গের ক্ষত মেরামত করা হয়েছে। যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত ছিল। প্রচুর রক্তপাতের কারণে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তার চিকিৎসা করা হচ্ছে।