বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বের হয়ে ধর্ষণের শিকার হলেন এক যুবতী। তাঁকে মারধরও করা হয়। এমনকি হেরোইন খাওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেয় ধর্ষণে জড়িতরা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম শেখ সোলেমান ওরফে সোহেল, রোহিত মির্জা, শেখ সিরাজ, শেখ আসগর ওরফে মনু ও মহম্মদ আরিফ। বর্ধমান থানার বিজয়রামের ক্যানেলপাড়, মসজিদতলা, হটুদেওয়ান পীরতলা ও শোলাপুর এলাকায় ধৃতদের বাড়ি। ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন পেশায় মোজাইক মিস্ত্রি। বুধবার ভোররাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নির্যাতিতার পরনের পোশাক পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যুবতীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের এদিনই বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের সাতদিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন সিজেএম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান থানা এলাকায় বছর ২০–র ওই যুবতীর বাড়ি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁর বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বের হন তিনি। পিৎজা খেয়ে রাত সাড়ে ৮টা–৯টা নাগাদ বিজয়রামের পথ ধরে তাঁরা হাঁটছিলেন। সেসময় আচমকা পাঁচজন যুবক তাঁদের সামনে হাজির হয়। জোর করে তাঁদের পথ আটকায়। তাঁদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে তারা। তাঁরা দিতে রাজি না হলে জোর করে যুবতীর কাছে থাকা ৬০০০ টাকা তারা কেড়ে নেয়। যুবতীর বন্ধুরও ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর যুবতীকে জোর করে একজন রাস্তার পাশে একটি নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে যায়। যুবতীর বন্ধুকে দু’জন জোর করে আটকে রাখে। এরপর সোলেমান যুবতীকে ধর্ষণ করে। তার দুই সঙ্গী যুবতীর শ্লীলতাহানি করে। এমনকি বাধা দিতে গেলে যুবতীকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়। পরে বাকিরা এসেও যুবতীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর ধর্ষণে জড়িতরা যুবতীকে হেরোইন খাওয়ার জন্য জোর করে। সেখান থেকে কোনোরকমে নিজেকে মুক্ত করে বন্ধুর সঙ্গে টোটোয় চেপে চলে আসেন ওই যুবতী। পরে রাতেই তিনি ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এদিনই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যুবতী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাঁর বন্ধুর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর জন্য আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।