বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্য সরকারের তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা হাতানোর অভিযোগে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ মালদহের বৈষ্ণবনগর থেকে কমপিউটার ডিপ্লোমাধারী এক যুবককে গ্রেপ্তার করল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ধৃতের নাম হাসেন আলি। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, গত ৩১ অক্টোবর বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলের পক্ষ থেকে তাঁদের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের হয়। স্কুলের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগে জানানো হয় স্কুলের ২৮ জন ছাত্র ট্যাবের টাকা পায়নি। তাদের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এরপরই জেলা পুলিশ ডিএসপির অধীনে একটি স্পেশাল তদন্তকারী টিম গঠন করে কাজ শুরু করে। তাঁরা বিভিন্ন সূত্র মারফত জানতে পারেন মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রীদের এই ট্যাবের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপরই তাঁরা সোমবার বৈষ্ণবনগরে নিজের বাড়ি থেকে হাসেন আলি নামে ৩৯ বছরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত যুবক জানিয়েছেন, গত জুলাই মাসে বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বদল করে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত গোটা জেলা থেকে ৮৫ জন ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ জন ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্ট নাম্বার ভুল লিপিবদ্ধ হয়েছিল। বাকি প্রায় ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জেনেছেন। এর মধ্যে তদন্ত নেমে তাঁরা সমস্ত অ্যাকাউন্টই বন্ধ করে দেন। যার মধ্যে প্রায় ২৫টি অ্যাকাউন্টে এখনও ট্যাবের টাকা রয়েছে। বাকিগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে। ধৃত যুবক স্বীকার করেছে তার মোবাইল থেকেই সে এই কাজ করেছে। পুলিশ ওই মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে। এরই পাশাপাশি পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় নদীয়া জেলা-সহ আশপাশের কয়েকটি জেলার সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ রেখেছেন। একইসঙ্গে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছেন। এভাবে ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা লোপাট করার ঘটনায় কারা কারা জড়িত তা জানতে এদিনই ধৃত হাসেন আলিকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেবার আবেদন করে আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলার ২০টি স্কুল তাঁদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। সমস্ত ঘটনারই তদন্ত চলছে। তদন্তে সাইবার সেলের বিশেষজ্ঞদেরও কাজে লাগানো হয়েছে। এদিনই ধৃতকে সাইবার সেলের অভিজ্ঞরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন।