E Purba Bardhaman

নিখোঁজ স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ধৃত যুবক

A youth held for allegedly extorting lakhs of rupees by promising to find a man's missing wife and son

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নিখোঁজ হওয়া স্ত্রী ও ৫ বছরের ছেলেকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে রায়না থানার পুলিস। ধৃতের নাম জাকির আলি খান ওরফে বসির। বাঁকুড়ার জয়পুর থানার বিক্রমপুরে তার বাড়ি। শুক্রবার বিকেলে রায়না থানার শ্যামসুন্দর বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা ধৃত কবুল করেছে বলে পুলিসের দাবি। তারা আরও অনেককে ফাঁদে ফেলে এ ধরণের প্রতারণা করেছে বলে জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে। মেমারির এক বাসিন্দা চক্রের মূল পাণ্ডা বলে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে পুলিস। ধৃতকে শনিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করতে এবং পাণ্ডা সহ দলের বাকিদের হদিশ পেতে ধৃতকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতের ৫ দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পুলিস ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের ১০ সেপ্টেম্বর রায়না থানার শ্যামসুন্দরের বাসিন্দা সুমন্ত সাঁতরার স্ত্রী মমতা সাঁতরা ও তাঁদের ৫ বছরের ছেলে সৌম্যদীপ সাঁতরা নিখোঁজ হয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সুমন্ত। তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। বিভিন্ন জায়গায় তিনি যান। গত ২২ অক্টোবর হুগলির আরামবাগ শহরে তাঁর সঙ্গে জাকিরের পরিচয় হয়। পরিচয় একটু জমতেই জাকিরকে তিনি তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নিখোঁজ হওয়ার কথা বলেন। জাকির যেন সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমানে তার এক পুলিস বন্ধু আছে বলে সুমন্তকে জানায় জাকির। সেই পুলিস বন্ধুকে বললে তিনি সুমন্তর হারিয়ে যাওয়া স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে দেবেন বলে আশ্বাস দেয় জাকির। এরপর মোবাইলে সুমন্তর সঙ্গে পুলিস পরিচয় দেওয়া সেই ব্যক্তির কথা বলিয়ে দেয় সে। সেই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে বের করে দেবেন বলে সুমন্তকে আশ্বাস দেন। তার জন্য ৫০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানানো হয় তাঁকে। তিনি পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে একটি কাফে থেকে সেই টাকা দেন। এরপর জেলা শাসকের অফিস, এসপির অফিস প্রভৃতি জায়গায় কাগজ করতে হবে বলে কয়েক দফায় তাঁর কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এসবের মধ্যেই ২০ ডিসেম্বর স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে পান সুমন্ত। স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি তিনি জাকিরকে জানান নি। এরপর টাকা আদায়ের ফের ফন্দি আঁটে জাকির। শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ সুমন্তর বাড়িতে আসে সে। সেই সময় সুমন্ত বাড়িতে ছিলেন না। তাঁকে ফোন করে জাকির জানায়, টোকেনের জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হবে। সেই টোকেন দেখিয়ে শক্তিগড় থানার বামবটতলা এলাকার একটি হোম থেকে ছেলেকে ফেরত পাবেন তিনি। তিনি যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তা বুঝতে পারেন সুমন্ত। তিনি ফোন করে বিষয়টি থানায় জানান। ততক্ষণে অবশ্য সুমন্তর বাড়ি থেকে কেটে পড়ে জাকির। শ্যামসুন্দর বাজার এলাকা থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়। সুমন্ত বিষয়টি লিখিতভাবে থানায় জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করেছে থানা।

Exit mobile version