বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ফের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অগোচরে প্রায় ২ কোটি টাকা উধাওয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো। সম্প্রতি বর্ধমানের বড়বাজার এলাকায় ইউকো ব্যাংক থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিক্সড ডিপোজিটের প্রায় ২১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে তুলে নেবার চেষ্টার অভিযোগ সামনে আসে। বিষয়টিতে সন্দেহ হওয়ায় ব্যাংক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানোর পর দ্রুততার সঙ্গে তা আটকানো গেলেও ২০২২ সালে বর্ধমানের জেলখানা মোড় এলাকায় পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে প্রায় ২ কোটি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো জলঘোলা শুরু হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরি জানিয়েছেন, সম্প্রতি একই ভাবে ইউকো ব্যাংক থেকে ২১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করা হচ্ছিল। সেটা সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংককে জানানো হয় কোনও অ্যাডভাইস পাঠান হয়নি। ফলে সেটা স্টপ হয়ে যায়। সেই ঘটনায় ১ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ভক্ত ঘোষকে শোকজ এবং অপর অভিযুক্ত অস্থায়ী এনামুল হককে বিতাড়িত করা হয়েছে। ভক্ত ঘোষের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর কোয়ার্টারের দেওয়ালে শোকজ নোটিশ আটকে দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, ইউকো ব্যাংকের ঘটনার পরই ফিনান্স অফিসার সমস্ত ব্যাংকেই জানিয়েছেন ম্যাচিউরের আগে এই ধরনের টাকা তোলার বিষয় নজরে এলে তা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হবে। তারপর পিএনবি থেকে গত পরশুদিন জানানো হয়েছে ২০২২ সালে জেলখানা মোড়ের ব্রাঞ্চে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সুজিতবাবু জানিয়েছেন, জেলখানা মোড়ের পিএনবি ব্রাঞ্চে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। সেটা ২০২২ সালে প্রি-ম্যাচিউরিং হয়ে গেছে। কিন্তু কন্ডিশনে লেখা আছে যে, এখানে নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রি-ম্যাচিউরিং করা যাবে না। এমনকি ম্যাচুরিটি পিরিয়ডের পরে ফিক্সড ডিপোজিটটা অটোমেটিক রিনিউ হয়ে যাওয়ার কথা। তাসত্ত্বেও কিন্তু দেখা গেছে ভুয়ো ডকুমেন্টস, ফিনান্স অফিসার ও রেজিস্ট্রারের ভুয়ো স্বাক্ষর করে প্রি-ম্যাচিউরিং করে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে নির্দেশ দেওয়া আছে, ম্যাচুউর হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। তা সত্ত্বেও ব্যাংক এটা কেন করলো জানি না। আইনি পরামর্শ নিয়ে এফআইআর করা হচ্ছে। ৩ টে ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। এটা শুধু সই নকল নয়। নিয়ম আছে, ম্যাচুউর হলে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান হয়, সেখান থেকে অ্যাডভাইসের নিচে দুটো সই করে পাঠান হয়। তারপর ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু এখানে যা হয়েছে ব্যাংক এটা করতেই পারে না। টাকাটা একটা অ্যাকাউন্টে গেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন।