অবশেষে রেলমন্ত্রীদের উদ্বোধন ছাড়াই পুরোদমে চালু হল বর্ধমান-কাটোয়া রেলওয়ে উড়ালপুল
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান):- দফায় দফায় বিজ্ঞপ্তি জারীই সার – শেষ পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই বর্ধমান-কাটোয়া রেলওয়ে উড়ালপুলের উদ্বোধন এবং গত ৩দিন ধরে চলতে থাকা উড়ালপুল চালু নিয়ে নাটকের যবনিকা পতন ঘটল। শুক্রবারই রেলবিকাশ নিগম লিমিটেড জানিয়ে দেয় এই উড়ালপুলের ওপর দিয়ে ট্রাফিক যাতায়াতের ক্ষেত্রে আর কোনো অসুবিধা নেই। আর তারপরেই সারাদিন ধরে ধাপে ধাপে উড়ালপুল চালু করে দেওয়া হল। কার্যত, কেন্দ্রীয় রেল দপ্তরের কোনো মন্ত্রীর উদ্বোধন ছাড়াই চালু হয়ে গেল বর্ধমানের রেলব্রীজ। যদিও এখনো বেশ কিছু ব্রীজ তথা ব্রীজের ওপর চলাচলের জন্য সিগন্যালিং সিস্টেম বা পরিবহণ দপ্তরের বিভিন্ন মোটরভেহিকেলসের নিয়ম সংক্রান্ত সাংকেতিক চিহ্ন এখনও এই রেলব্রীজের পথে দেওয়া হয়নি। এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এদিন থেকেই পুরোদমে রেলব্রীজের কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এখনই মোটরবাইক বা দুচাকা ও তিনচাকার যান এই নতুন ব্রীজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। দুচাকা ও তিনচাকা তারা পুরনো ব্রীজ দিয়েই যাতায়াত করবে। তিনি জানিয়েছেন, চর্তুমুখী ব্রীজের ওপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদেরও অভ্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাই এখন দুচাকা ও তিনচাকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোট ৩টে সিফটে ৮০জন ট্রাফিক পুলিশ কর্মরত থাকছেন এই ব্রীজে। এদিকে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের বীরসিংহ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই রেলব্রীজের উদ্বোধন করার পর শুক্রবার থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নামে ফলক লাগানো হয়েছে। জানা গেছে, ব্রীজের ভেতর ও বাইরে মোট ১৬টি ফলক লাগানো হচ্ছে। অন্যদিকে, জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মমতা বন্দোপাধ্যায় উদ্বোধন করার পররেল দপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারী করে জানানো হয়েছিল শুক্রবার এই ব্রীজের উদ্বোধন করবেন রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গদি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তা বাতিল করা হয়। তারও আগে জানানো হয়, এই ব্রীজের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। কিন্তু তা বাতিল করা হয়। এরপর শুক্রবার সকালে এই রেলব্রীজ নির্মাতা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের পক্ষ থেকে রেলের হাতে ব্রীজের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। একইসঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দেয়, এখন যানচলাচলের জন্য কোনোরকম অসুবিধা নেই। পুরোপুরি ফিট এই ব্রীজ। এরপরই শুক্রবার সকালে বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর নেতৃত্বে বিজেপি নেতৃত্বরা মোটরবাইক রেলি করেন ব্রীজের ওপর দিয়ে। যদিও সকালের দিকে কিছুক্ষণ বাইক চলাচল করলেও বেলার দিকে আস্তে আস্তে তা বন্ধ করা হয়। একইসঙ্গে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড তাদের ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে শুরু করে। এরপরই বিকালের দিক থেকে পুরোপুরি চালু করে দেওয়া হয় ব্রীজের চলাচল। যদিও ট্রাফিক সূত্রে জানা গেছে, এখনও ব্রীজে রাম্বেল স্ট্রীপ এবং ফ্লেক্সিবেল রোড ডিভাইডার লাগানোর কাজ বাকি থাকায় দুচাকা বা তিন চাকা এবং হেঁটে যাতায়াত করার ক্ষেত্রে ব্রীজের পাশে যে সিঁড়ির মাধ্যমে ওঠানামা করা হবে তা এখনও সম্পূর্ণ না হওয়ায় হাঁটাচলায় নিষেধাজ্ঞা জারী রাখা হয়েছে। এগুলি বসানোর পর পুরোপুরি সকলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে রেলব্রীজ। বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী এদিন জানিয়েছেন, গত ২৪ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই রেলব্রীজ চালু হয়ে গেছিল। এখনও কিছু সিগন্যাল সিস্টেম বাকি থাকায় পুরোপুরি চালু হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই পুরোপুরি চালু হবে। তিনি জানিয়েছেন, পুরোপুরি নতুন রেলব্রীজ চালুর পরই আস্তে আস্তে পুরনো রেলব্রীজকে ভেঙে দেওয়া হবে বলে রেল জানিয়েছে।