বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সোমবারই পূর্ব বর্ধমানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বন্যা কবলিত এলাকায় ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর সেই নির্দেশ মেনে সোমবার রাত থেকেই সকাল থেকেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পূর্ব বর্ধমানের বন্যা কবলিত এলাকায় শুরু হল ত্রাণ বিলি। বর্ধমান সদর সাউথের এসডিপিও অভিষেক মন্ডল জানিয়েছেন, জ্যোৎশ্রীরামের পাইকপাড়া, কোরা শিয়ালি, অমরপুর, সাজামানতলা প্রভৃতি এলাকায় ফুড প্যাকেট, ত্রিপল, কার্বলিক অ্যাসিড, ব্লিচিং পাউডার সহ চাল, ডাল, তেল, আলু, মুড়ি, বিস্কুট, সয়াবিন, চিড়ে প্রভৃতি খাবার তুলে দেওয়া হয় বন্যা দুর্গত পরিবারগুলির হাতে। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ-সহ জেলা পুলিশের কর্তারাও। পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, গোটা জেলা জুড়েই বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্গতদের সহযোগিতায় পুলিশের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি চলবে এবং একইসঙ্গে বাসিন্দাদের কোথাও কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা তাও লক্ষ্য রাখা হবে।
এর পাশাপাশি মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিয় কুমার দাস, শুভলক্ষ্মী বসু, জেলা বির্পযয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক প্রতীক বন্দোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরাও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি নদী বাঁধগুলির অবস্থা, রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি ও পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখেন।
অন্যদিকে, জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্লক জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলেন ডেপুটি সেক্রেটারি (পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর) শুভংকর ভট্টাচার্য্য। ব্লকের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জোতচাঁদ, পাইকপাড়া, দ্বীপেরমানা সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম তিনি মঙ্গলবার ঘুরে দেখেন। তাঁর সাথে ছিলেন জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থ সারথি দে, বিধায়ক অলোক মাঝি, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ভূতনাথ মালিক, পূর্ত কর্মাধক্ষ্য মেহেমুদ খান, সাহাবুদ্দিন মন্ডল-সহ অন্যান্যরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের কাছে খোঁজ নেন সকলে বন্যার সময় ত্রাণ শিবিরে ছিলেন কিনা, খাবার ঠিকমতো সবাই পেয়েছিলেন কিনা।
উল্লেখ্য, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি মঙ্গলবার বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং শিব শংকর সেবাসমিতির যৌথ সহায়তায় এবং বড়বৈনান আমরা সবাই সংঘের উদ্যোগে বড়বৈনান গ্রামে আয়োজিত হল বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা শিবির এবং রোগীদের বিনামূল্যে ঔষধ দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি জাতীয় পুষ্টি মাস উপলক্ষ্যে মানুষকে খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতন করা হয়। ড: গীষ্পতি চক্রবর্তী মানুষকে সঠিক খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন করেন। বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক প্রলয় মজুমদার জানিয়েছেন, প্রতিটি বানভাসি এলাকায় তাঁরা তাঁদের সাধ্যমতো স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেবার চেষ্টা করছেন।