বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ফের এটিএম প্রতারণার ঘটনা ঘটল বর্ধমানে। ব্যাংক অফিসার পরিচয় দিয়ে এটিএমের তথ্য জেনে নিয়ে দুই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতারিতরা বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু, ঘটনায় এ পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। থানার এক অফিসার বলেন, এ ধরণের সাইবার অপরাধের তদন্ত করার মতো পরিকাঠামো থানায় নেই। সাইবার ক্রাইম বিভাগ ছাড়া এটিএম প্রতারণার কিনারার সম্ভাবনা খুবই কম। গ্রাহকদের এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। নাহলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। বন্ধ করা যাবেনা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে বেলা ১০টা নাগাদ একটি ফোন পান বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর ভাঙা মসজিদপাড়ায় আনন্দপ্রসাদ মাকড়। ব্যাংকে তার তিনটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সব কটিরই এটিএম কার্ড রয়েছে। ব্যাংকের ম্যানেজার বলছি বলে তাকে তাড়াতাড়ি এটিএম কার্ড নিয়ে ব্যাংকে আসতে বলা হয়। না হলে কার্ড তিনটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে তাকে বলা হয়। তিনি ঘন্টা দুই পরে ব্যাংকে যাওয়ার কথা বলেন। তখন তাকে এটিএম কার্ডের নম্বর বলতে বলা হয়। তাড়াতাড়িতে তিনি এটিএম কার্ডের নম্বর বলে দেন। কিছুক্ষণ পরে ব্যাংকে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, ম্যানেজার তাকে ফোন করেন নি। পরে জানা যায়, তার ৩টি অ্যাকাউন্ট থেকেই কয়েক দফায় ৫৭ হাজার ৯৮৭ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁর এটিএম কার্ডগুলি বন্ধ করে দেয়। পরেরদিন ফের তার কাছে ব্যাংক ম্যানেজারের পরিচয় দিয়ে একটি ফোন আসে। ফোন পেয়ে আনন্দ গালিগালাজ করেন। তখন তাকে টাকা ফেরত পেতে হলে আসানসোলে যেতে বলা হয়। এরপর তিনি ফোনটি কেটে দেন।
একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন শহরের শাঁকারিপুকুরের সমীত সরকার। রবিবার তার কাছে ৫-৬ বার ফোন আসে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সাইবার সিটি ব্রাঞ্চের কর্মী পরিচয় দিয়ে এক মহিলা তাকে ফোন করে। তার ক্রেডিট কার্ডে ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকার ফ্রি অফার পেয়েছেন বলে তাকে বলা হয়। টাকা পেতে হলে তাকে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দিতে হবে বলে জানায় মহিলা। বিশ্বাস করে তিনি তথ্য দিয়ে দেন। তার ক্রেডিট কার্ড থেকে ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা উঠে যায়। টাকা উঠে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মহিলা জানায়, পুরো টাকা তার সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে যাবে। এরপর তাকে ডেবিট কার্ডের তথ্য দিতে বলা হয়। তিনি তা দেওয়ার পর তার কাছে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড আসে। সেটি তিনি মহিলাকে দিয়ে দেন। এরপর তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৪ হাজার টাকা উঠে যায়। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে সেদিনই তিনি থানায় অভিযোগদায়ের করেন।