বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রধানমন্ত্রী নন প্রচারমন্ত্রী। ৮ হাজার কোটি টাকার বিমানে চেপে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার এই মন্তব্যে কড়া জবাব দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সোমবার বর্ধমানের দেওয়ানদিঘী মোড় এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে এই প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে দিলীপবাবু বলেন, কারো বাপের টাকায় চড়ছে নাকি? দেশের ১৪০ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। আমেরিকার বাইডেনের চেয়েও দামি বিমান হওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমাদের ভিখারির পার্টি নয়, ভিখারির দেশও নয়। যারা ভিখারি বানিয়েছে তারা এসব বলছে। শত্রুঘ্ন সিনহা এবং কীর্তি আজাদ তাঁরা জানেনা বর্ধমানের কি পরিস্থিতি। তারা তো বহিরাগত। প্রচারটা শেষ করে ভোটটা করুক। তার আগেই না রিটায়ার্ড হয়ে যায়। তাপমাত্রা বাড়ছে। লড়াই করুক। শুনলাম একজন ছুটি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। একজন ভয়ে বের হচ্ছে না। তাঁরা কি রাজনীতি করবে বিজেপির সঙ্গে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত ২ নম্বরি। কোনও ভদ্রলোক বিজেপি করে না। একথারও উত্তর দিয়েছেন এদিন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, উনি একমাত্র ভদ্রলোক আছেন। যার বাড়ির বউ থেকে মেয়ে, চাকর বাকর সবাইকে ইডি ডাকছে। রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে চোর চোর আওয়াজ দিচ্ছে। তাঁর চোদ্দ পুরুষ চোর। বাড়ির চাকর বাকর কুকুর বিড়াল সব চোর। এই কালচার নিয়ে এসেছে ব্যানার্জি পরিবার। আর আজকে মুখ্যমন্ত্রীকে চোর চোর শুনতে হচ্ছে ওনার জন্য। গঙ্গারামপুরে বিএসএফ গুলি চালিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমার এক ভাইকে বিএসএফ গুলি চালিয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিএসএফ বিজেপিতে ভোট দিতে বলছে। এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ওনার ভাই যদি শাজাহান, ভাদু শেখ হয় তারা তো গুলিই খাবে একদিন। আজ হোক বা কাল হোক। বুঝতে পারছেন না উত্তরপ্রদেশে কী রকম হচ্ছে? দুই ভাই একসঙ্গে খেলো, ওপরে চলে গেল। সময় আসছে। দিদির ভাইদের কপালে ওটাই লেখা রয়েছে। জনতা বুঝিয়ে দেবে। সেই জন্য যারা কাটমানি খায়,তোলাবাজি করে, রেশন খায়, যারা ১০০ দিনের কাজে টাকা খায় তারা কি খাবে?শেষ পর্যন্ত গুলিই তো খাবে, তাই না। তবে কি বুলডোজার সরকার চলবে । দিলীপবাবু বলেন, দেখা যাক। কার সরকার চলে। বিজেপির সরকার হবে এটা তো নিশ্চিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন টার্গেট হয়ে গেছেন উনি এবং ওনার ভাইপো। দিলীপবাবু বলেন, ভোট হলেই উনি টার্গেট হন। খালি টার্গেট। একদিন বাঘিনী। আর ভোট হয়ে গেলেই বিড়াল হয়ে যান। আমি মেয়ে। আমাকে একা টার্গেট করছে। যা কর্ম করেছেন তার ফল ভোগ করতে হবে। এবারের ভোটে উনি কোনও সিমপ্যাথি পাবেন না। পুরো বাংলা সমাজকে দুর্নীতিতে ছেয়ে দিয়েছেন। নেতাদেরকে চোর বানিয়েছেন। চোরদেরকে নেতা বানিয়েছেন। এর প্রায়শ্চিত্ত ওনাকেই করতে হবে। উনি ভেবেছিলেন বেঁচে যাব। কিন্তু কোনো রাস্তা নেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগে কালী পটকা ফাটান তারপর বোমা পাঠাবেন। দেখে রাখুন কি হয়। না বোমা বন্দুক দিয়ে তো রাজনীতি হয় না। দিলীপবাবু বলেন, কালকে পালসিটে আমাদের ছেলেরা ঝান্ডা বাঁধছিল। বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক দাঁড়িয়ে থেকে মারপিট করিয়েছে। আমাদের লোককে মেরেছে। যত ইলেকশন এগিয়ে আসছে তত হারার সম্ভাবনা বাড়ছে। তাই হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। আজ এখানে বসে আছি দেওয়ানদীঘি মোড়ে। আমাদের চা চক্র হওয়ার কথা ছিল। মর্নিং ওয়ার্ক করে এলাম। কাল রাত থেকে টিএমসির গুন্ডারা যত চায়ের দোকান সব হুমকি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এই মোড়ে সকালবেলা প্রচুর লোক আসে চা খেতে। সব বন্ধ। আরে চা না খেলে কি আমরা কাজ করতে পারব না? মানুষকে কেন কষ্ট দিচ্ছেন। গরিব মানুষের চায়ের দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে দিলীপ ঘোষ আসবে বলে। এই রাজনীতি বর্ধমানে চলবে? যা করে এসেছে তার ফল ভোগ করতেই হবে। এই ভোট থেকেই তা বোঝা যাবে। এদিন এই দোকান বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানাতেই এক বিজেপি কর্মীকে উদ্দেশ্য করে দিলীপ ঘোষ বলেন, যত এরা করবে না তত তোমাদেরই লাভ হবে। যেখানে যা ইচ্ছে করুক, লোককে ওরা টর্চার করুক তাহলে লোক খেপবে। ওদেরকে বলো ওরা জিতলে পার্মানেন্টলি বন্ধ করে দেবে। ইলেকশনের পরে তাহলে কি পার্টি অফিসেই তালা মেরে দিই তাহলে ঝামেলা মিটে যাবে। ওই একটা বন্ধ করলেই দোকান বন্ধ। ওরা বাকি সব করুক। বলে রাখো ঝান্ডাটা পাল্টে দিক।