বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আলুতে রং মেশানো হলে কাউকেই রেয়াত করা হবে না বলে শনিবার সাফ জানিয়ে গেলেন রাজ্যের কৃষিজ বিপনন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। এদিন বর্ধমান টাউন হলে একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। তিনি এদিন বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন রাজ্যের মানুষ ভাল থাকুক ভাল খাবার খাক। এটাই মুখ্যমন্ত্রী সকলকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আলুতে রঙ মেশানো বন্ধ করা হয়েছে। রাজ্যের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীও চান রঙ দেওয়া বন্ধ হোক। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী এখনও এটা করছেন। এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কয়েকজনের জন্য সকলের ক্ষতি মেনে নেওয়া হবে না। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেই সিঙ্গুরে আলুতে রং মেশানোর ঘটনায় ১০ কুইন্ট্যাল আলু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তপনবাবু এদিন বলেন, সরকার চায়না কাউকে গ্রেফতার করতে, কিন্তু স্বচ্ছতা চাই। আলুর বীজ নিয়ে সরকারের সহযোগিতা দরকাল হলে সরকার তৈরী আছে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আলুতে অ্যালামাটি না মেশানো হলে ব্যবসা করতে পারছেন না। এটা হয়ত সত্যি। নিশ্চয়ই করুন, ঝাড়খন্ডের বর্ডারে গিয়ে করুন আপত্তি নেই। বাংলার বর্ডার ছাড়িয়ে গিয়ে করুন আপত্তি নেই। তিনি বলেন, কিছু ফড়ে তথা অসাধু ব্যবসায়ী আলুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। জনসাধারণকেও এটা লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি বলেন, একটা সরকার মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চিন্তা করছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরকার আছে। সরকারকেও আপনারা সহযোগিতা করবেন। বাম আমলে একটা মন্ত্রীর কাছে যাওয়া যেত না, এখন মুখ্যমন্ত্রী-সহ সমস্ত মন্ত্রীদের কাছে সরাসরি যাওয়া যায়। সমস্যা হলে আসুন, আলোচনা করুন। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, বাংলায় বছরে ৪ লক্ষ টন আলুর বীজ লাগে। এতদিন পাঞ্জাবের উপর নির্ভর করে আসতে হয়েছে। সরকার থেকে ২০১২-এর আগে স্থানীয়ভাবে কোনও প্রচেষ্টা হয়নি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তৈরী বীজ লোভনীয়ভাবেই পাশের রাজ্য থেকে কিনে নিয়ে যায়। তাঁরা বিশ্বাস করেন না যে এখানে খাবার আলু হয় কিন্তু বীজ হয় না। এর পেছনে কিছুটা ব্যবসায়িক উপলব্ধি আছে। তিনি বলেন, এখানেই যদি আলুবীজ তৈরী করা হয়, তাহলে বাইরের বীজ এখানে বেশি দরে বিক্রি করা যাবেনা। অন্য রাজ্যে সহজে সার্টিফায়েড বীজ পাওয়া যায়না। যারা আলুবীজ নিয়ে খেলা করেন তাদের একটু সাবধান করে দেন এদিন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, রাতারাতি আলুবীজের প্রয়োজন এখানকার উত্পাদিত বীজ দিয়ে অভাব পূরণ করা যাবে না।কিন্তু চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরী তৈরী করেছেন। ৫ জেলায় আলুর বিভিন্ন রকম চাষের ওপর জোর দেওয়ার জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্য দেশের প্রতিনিধিদেরও তা দেখানো হবে।