গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- শনিবারই লাগু হয়েছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য আদর্শ আচরণ বিধি। আর এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এই বিধিকে তোয়াক্কা না করে তৃণমূলের দলীয় প্রতীক আঁকা ফর্মে সরকারি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও কর্মশ্রী প্রকল্পে ৫০ দিনের কাজের আবেদন পূরণ করানো হল আবেদনকারীদের। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে গলসীর উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের কোলকোল স্কুল চত্বরে। এই ঘটনাকে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। জানা গেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের ওই ফর্মের বাঁদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং ডান দিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় প্রতীক, নিচে লেখা রয়েছে জয় বাংলা। আর সেই ফর্মেই চলল রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও কর্মশ্রী প্রকল্পের ৫০ দিনের কাজের ফর্ম ফিলাপ। এমনকি ফর্ম ফিলাপের নামে নেওয়াও হল ১০-২০ টাকা। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে গলসীর উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের কোলকোল স্কুল চত্বরে করা তৃণমূলের ক্যাম্প ঘিরে। উল্লেখ্য, শনিবারই ঘোষণা হয়েছে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট, সেই মুহূর্ত থেকেই লাগু হয়েছে আদর্শ আচরণ বিধি। এদিন, কোলকোল স্কুলে ফর্ম পূরণের জন্য আসা স্থানীয়দের দাবি, লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। সেই জন্য নতুন করে ফর্ম পূরণ করতে হবে বলে মাইকিং করা হয়েছিল গ্রামে। সেইমতো রবিবার কোলকোল স্কুলে তারা ফর্ম পূরণ করতে এসেছেন। এমনকি রাজ্য সরকারের কর্মশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ দিনের কাজেরও ফর্ম পূরণ করানো হয়েছে। সরকারি প্রকল্পে কীভাবে তৃণমূলের দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে চললো ফর্ম পূরণ? আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার পরেও কীভাবে এই ক্যাম্প হল তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এমনকি নির্বাচনী মনিটরিং কমিটিই বা কোথায় গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, শাসক দলের কর্মসূচির সঙ্গে সরকারি কর্মসূচি তারা গুলিয়ে ফেলছে। সরকারি প্রকল্পের ফর্ম পূরণ তৃণমূলের নেতারা যে করাতে পারে না, সেই বোধটাই হয় তো তাদের নেই বা থাকলেও ইচ্ছা করে সামনে যেহেতু ভোট আছে তাই সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর জন্য ফর্ম পূরণ করিয়েছেন। এই ফর্ম পূরণের জন্য যে ১০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে সেই টাকার কোন হিসেব নেই বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। মৃত্যুঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, তৃণমূল তোলাবাজি করতে ও কাটমানি নিতে অভ্যস্ত। অন্যদিকে, এব্যাপারে উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য দুলালি বাউরির দাবি, অঞ্চল সভাপতি নিখিল রায়ের নির্দেশে এই ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে এবং তিনি সেই দলীয় প্রতীক দেওয়া ফর্ম দিয়েছেন। যদিও এই ক্যাম্পের কথা জানতেন না বলে দাবি নিখিলবাবুর। তিনি বলেন, আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার আগে মাইকিং করা হয়েছিল কিন্তু আজকের এই ক্যাম্পের কথা তিনি জানতেন না।