বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নাবালিকাকে অপহরণের মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়ায় ৪ পুলিশ অফিসার ও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করলেন বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শেখ মহম্মদ রেজা। বারবার সমন পাঠানোর পরও সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না পুলিশ অফিসাররা। চিকিৎসকও হাজির না হওয়ায় মামলাটি অযথা ঝুলে রয়েছে। সাক্ষ্যদান নিশ্চিত করতে পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য এবং চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরওয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে পুলিশ অফিসারদের পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য বর্ধমান থানার আইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি না করা পর্যন্ত পুলিশ অফিসাররা আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না বলে নির্দেশ দিতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন বিচারক। পরওয়ানা জারি হওয়া পুলিশ অফিসারদের নাম কুলদীপ রাম,শঙ্কর দাস,শম্ভুনাথ গুহ ও দুর্গাপদ মহাপাত্র। প্রথমজন ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার গালুডিহি থানার সাব-ইনসপেক্টর। বাকিরা মেমারি থানার অফিসার ছিলেন। ডাক্তার অচিন্ত্য বিশ্বাস বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের ৩ জুন সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় মেমারি থানার দেউলিয়া গ্রামের বছর ষোলোর এক কিশোরী। তার বাবা ঘটনার কথা জানিয়ে মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিস জানতে পারে, কিশোরী গালুডিহি থানা এলাকায় রয়েছে। মেমারি থানার পুলিশ সেখানে হানা দিয়ে ২০ জুন কিশোরীকে উদ্ধার করে। তাকে অপহরণের অভিযোগে সেখানকার বাসিন্দা গণেশ কুমার মুণ্ডাকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। তদন্তে নেমে পলিশ জানতে পারে, ভেলোরে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে কিশোরীর সঙ্গে গণেশের পরিচয় হয়। দু’জনের মধ্যে ভাব-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিশোরী হাওড়া স্টেশনে যায়। সেখান থেকে ট্রেন বদল করে সে খড়্গপুরে যায়। সেখানে তাকে নিতে আসে গণেশ। কিশোরীকে নিয়ে সে গালুডিহিতে চলে যায়। উদ্ধার করার পর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কিশোরীকে পরীক্ষা করানোর জন্য আনা হয়। যদিও সে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে অস্বীকার করে। তদন্ত সম্পূর্ণ করে শঙ্কর দাস চার্জশিট পেশ করেন। কেসের প্রথম তদন্তকারী অফিসার ছিলেন শম্ভুনাথ গুহ। এফআইআর রেকর্ডিং অফিসার ছিলেন দুর্গাপদ মহাপাত্র।