E Purba Bardhaman

গণ ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়ায় তিন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আদিবাসী মহিলাকে গণ ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য দিতে হাজির না হওয়ায় ডিএসপি দেবর্ষি দত্ত, সাব-ইনসপেক্টর দেবজ্যোতি সাহা ও কনস্টেবল গোঁসাই চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির নির্দেশ দিল বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। ঘটনার সময় আসানসোলের ডিএসপি ছিলেন দেবর্ষি। বারাবণি থানার ওসি ছিলেন দেবজ্যোতি, কনস্টেবল ছিলেন গোঁসাই। এছাড়াও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার জন্য আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের দুই এসিপি অঞ্জলি সিং ও তন্ময় মুখোপাধ্যায়কে সমন পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসানসোলের পুলিস কমিশনারকে পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেসের দ্বিতীয় তদন্তকারী অফিসার ছিলেন অঞ্জলি। তদন্ত সম্পূর্ণ করে আদালতে চার্জশিট পেশ করেন তন্ময়। আগামী ৬ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। পরওয়ানা কার্যকর করে সেদিন পুলিসকর্মীদের আদালতে হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য আসানসোলের পুলিস কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক শেখ মহম্মদ রেজা। সাক্ষ্যদান নিশ্চিত করতে আদালতের সামনে গ্রেপ্তার পরওয়ানা জারি করা ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বারাবণি থানার কাঁটাপাহাড়ির বছর পঁয়তাল্লিশের ওই আদিবাসী মহিলা শুয়োর খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কাটাপাহাড়ির স্বপন মণ্ডল ওরফে রিঙ্কা, তরুণ মণ্ডল, গৌতম মণ্ডল ও গাড়িচালক রাম খিলোন বাসরা থানের পিছন থেকে আদিবাসী মহিলাকে তুলে খাদানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে চারজন তাকে পরপর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ধর্ষণের পর মহিলাকে তারা ফেলে রেখে পালায়। সেদিন সারারাত খাদানে পড়েছিলেন মহিলা। পরেরদিন সকালে তিনি কোনও রকমে খাদান থেকে উপরে উঠে আসেন। মহিলার মেয়ে তাকে আসানসোল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ভরতি করে নেওয়া হয়। পরের বছরের ৩ জানুয়ারি তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। ৯ জানুয়ারি তিনি ঘটনার কথা জানিয়ে বারাবণি থানায় চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের কাউকেই পুলিস গ্রেপ্তার করতে পারেনি। স্বপন, তরুণ ও গৌতম আদালতে আত্মসমর্পণ করে। পরে তারা জামিনে ছাড়া পায়। মহিলার মেডিকেল পরীক্ষা ও গোপন জবানবন্দি নথিভূক্ত করায় পুলিস। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়েও রাম খিলোনের হদিশ পায়নি পুলিস। তার নাম বাদ দিয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার।

Exit mobile version