মেমারি (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারীভাবে কোনো ফেরিঘাট নয়। তবুও বছরের পর বছর ধরেই বাঁকা নদীতে এভাবেই চলছিল নৌকায় ফেরি পারাপার। আর মঙ্গলবার সেই বাঁকাতেই নৌকা ডুবে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন প্রায় ১৮জন যাত্রী। কোনোরকমে সাঁতরে তাঁরা পাড়ে উঠলেন। নৌকাডুবির এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-২ ব্লকের রুকাসপুর এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে। ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের কারণেই এই নৌকাডুবির ঘটনা। অন্যান্যদিনের মতো এদিন মেমারি-২ ব্লকের বোহার-১ গ্রামপঞ্চায়েতের রুকাসপুর এলাকায় বাঁকা নদীতে যাত্রীবাহী নৌকাটি ঘাট থেকে ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই বেসামাল হয়ে উলটে যায়। নৌকায় ১৮ জন যাত্রী ছিল। সকলেই জলে উল্টে পড়েন। নৌকায় থাকা বেশ কয়েকটি সাইকেল, যাত্রীদের জিনিসপত্র, মোবাইল সবই জলে পড়ে যায়। নৌকার মাঝি অপূর্ব বাগ জানিয়েছেন, আচমকাই নৌকা টলমল করেই উল্টে যায়। কিভাবে কি হল বুঝতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় আঠারো জন যাত্রী ছিল। ঘটনার পরেই স্থানীয় বাসিন্দারাই জলে ঝাঁপ দিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করেন। তাঁরাই উদ্ধারের কাজে হাত লাগান। বেশ কয়েকজন নিজেরাই সাঁতরে পাড়ে উঠে আসেন। পরে মেমারি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও তার আগেই সকলকেই উদ্ধার করা হয়। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, নৌকাটি মন্তেশ্বরের মড়াইপিড়ি এলাকায় যাচ্ছিল। খরিফ মরশুমে ধান রোয়ার কাজ শুরু হওয়ায় মেমারি -২ ব্লকের বেলেডাঙা, মহেশডাঙা, বিষ্টুপুর প্রভৃতি এলাকা থেকে দিনমজুরেরা নৌকায় চেপে মন্তেশ্বরের মড়াইপিড়িতে আসে। সেখানে মড়াইপিড়ি, শেলে, কুলে প্রভৃতি গ্রামের মাঠে মাঠে কাজ করে বিকেল নাগাদ তারা আবার নৌপথেই বাড়ি ফিরে যায়। এদিকে, এই নৌকাডুবির ঘটনা সম্পর্কে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বেআইনিভাবেই ওই নৌকা পারাপার চলছিল। এদিনের ঘটনায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ওই নৌকা পারাপার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় বছর দুয়েক আগে এখানেই নৌকা সহ ডুবে মারা যায় মন্তেশ্বরের কুলে গ্রামের এক বাসিন্দা।