E Purba Bardhaman

দেবোত্তর সম্পত্তির ওপর অঙ্গনওয়াড়ী, নাম মুছে দখল নিল ক্লাব

বিপুন ভট্টাচার্য, গুসকরা (পূর্ব বর্ধমান) :- অঙ্গনওয়াড়ী একটি কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে জায়গার মালিকানা খতিয়ে না দেখেই একটি দেবোত্তর সম্পত্তির ওপর অঙ্গনওয়াড়ী ভবন তৈরী করার পর মহা ফাঁপড়ে পড়ল গুসকরা পুরসভা। গুসকরা পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে গুসকরা পুরসভার ১৫নং ওয়ার্ডে একটি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব আসে। প্রথমদিকে ওই ওয়ার্ডের সুশীলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র তৈরি হওয়ার কথা ছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগাম অনুমতিও পুরসভা থেকে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ওই অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রটি তৈরী হয় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুশীলা লোহারপাড়ায়। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে গুসকরা পুরসভায় মোট ৭টি এই কেন্দ্র তৈরীর অনুমোদন দেওয়া হয়। তা নিয়ে প্রয়োজনীয় অনুমোদনও নেওয়া হয় জেলা স্কুল সংসদ থেকে। কিন্তু কিভাবে আচমকাই জায়গার স্থান পরিবর্তন করে একটি দেবোত্তর সম্পত্তির ওপর অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র নির্মাণ হয়ে গেল তা নিয়েই এবার শুরু হয়েছে চাপান উতোর। খোদ গুসকরা পুরসভার পুরপতি বুর্ধেন্দু রায় জানিয়েছেন, যে সময় এই অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র অনুমোদনের নির্দেশ আসে সেই সময় তিনি ক্ষমতায় ছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই তিনি বিষয়টি জানতেন না। পরবর্তীকালে গতবছর ২৩ জুন পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এই সুশীলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তে সুশীলা লোহারপাড়ায় এই অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রস্তাব পাশ হয়। এক্ষেত্রে পুরপতি সামগ্রিকভাবে দায় চাপিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সনাতন বেসরার ওপরই। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি নিয়ে রীতিমত বেকায়দায় পড়ায় পুরসভার পক্ষ থেকে বর্ধমানের সদর মহকুমা শাসক (উত্তর)-এর কাছে তিনি চিঠি লিখে সমগ্র ঘটনা জানিয়েছেন। সেখানে পুরপতি জানিয়েছেন, স্থানীয় কাউন্সিলারের নির্দেশক্রমেই জায়গা পরিবর্তন করে লোহারপাড়ায় কেন্দ্রটি তৈরী হয়। এমনকি যে জায়গায় কেন্দ্রটি তৈরী হয় সেই জায়গার মালিকানার বিষয়টি নিয়েও যে কোনোরকম খোঁজখবর নেওয়া হয়নি পুরসভার পক্ষ থেকে সেই বিষয়টিও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। এদিকে, দেবোত্তর সম্পত্তির ওপর ওই কেন্দ্র নির্মাণ হওয়ার পর বর্তমানে স্থানীয় একটি ক্লাব গোটা ভবনটির দখল নিয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের শিশুরাও। অন্যদিকে, এই ঘটনায় স্থানীয় কাউন্সিলার সনাতন বেসরা জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তিনি কিছু জানতেন না। স্বাভাবিকভাবেই লক্ষাধিক টাকা খরচ একটি দেবোত্তর সম্পত্তির ওপর অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র তৈরী এবং বর্তমানে তা বেদখল নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা গুসকরা পুরসভা জুড়ে। আদপেই এই ভবনের ভবিষ্যত নিয়েই বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, দখল করে রাখা ক্লাবের সদস্যরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের এই জায়গায় একটি ক্লাব ছিল। স্থানীয় কাউন্সিলার ক্লাবের জন্য পাকাভবন তৈরী করে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তাই এই নতুন ভবন তৈরী হওয়ার পর তাঁরা সেটি ব্যবহার করছেন। উল্লেখ্য, শুধু ব্যবহারই নয়, কার্যত অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের নাম মুছে দিয়েই সেখানে ক্লাবের নাম লিখে দেওয়া হয়েছে।

Exit mobile version