বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গরু বোঝাই গাড়ি আটকে হৈ চৈ ফেলে দিলেন পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে তুমুল উত্তেজনা দেখা দিল বর্ধমান শহরের বেচারহাট এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল আসানসোল থেকে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। পথে বর্ধমানের ২নং জাতীয় সড়কের বেচারহাট এলাকায় গরুবোঝাই একটি ট্রাক দেখতে পেয়ে তাকে আটকান বিজেপি নেত্রী। আর এরপরেই শুরু হয় উত্তেজনা। অগ্নিমিত্রা পল এদিন জানিয়েছেন, তিনি গাড়িতে যাবার সময়ই দেখতে পান একটি ট্রাকে উপর নিচ করে গরুগুলিকে অমানবিকভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গরুর গা থেকে রক্ত ঝরছিল। বিষয়টি দেখতে পেয়েই তিনি গাড়িটিকে আটকান। তাঁর দাবী, ওই গাড়ির চালক কোনোরকম বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। তাই তিনি গাড়িটি আটকান। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই গাড়ির চালক তাঁকে জানিয়েছেন, পুরুলিয়ার হাট থেকে ওই গরুগুলিকে বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুসুমগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার একটি করে থানায় ৯০০ ও ৮০০ টাকা করে ওই চালক দিয়েছেন। অগ্নিমিত্রা পল জানিয়েছেন, এভাবেই পুলিশকে টাকা দিয়ে দেদার চলছে গরু পাচার। বিজেপি বিধায়ক জানিয়েছেন, এই অমানবিক ঘটনা দেখার পরই তিনি পুলিশকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর ফোন তোলেননি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এরপরই তিনি বর্ধমানের বিজেপি নেতৃত্বকে জানান। বিজেপি নেতৃত্বের কাছ থেকে ফোন পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। অগ্নিমিত্রা পল এদিন জানিয়েছেন, গরু, ছাগল প্রভৃতিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হলে লাইভ স্টক পারমিটের নিয়ম মেনেই নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু এদিন গরুগুলিকে নির্মমভাবে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গরুর গা থেকে রক্ত ঝরছিল। তিনি জানিয়েছেন, কোনোরকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই গরুগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদিও ওই গাড়ির চালক মাধু মল্লিক জানিয়েছেন, পুরুলিয়ার গরুর হাট থেকে ৯টি গরুকে কিনে নিয়ে তিনি কুসুমগ্রামে যাচ্ছিলেন। গরুর হাটের কাগজ তাঁর কাছে রয়েছে। তা সত্ত্বেও গাড়ি আটকানো হয়েছে। অগ্নিমিত্রা পল এদিন জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে যে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী জড়িত। চালক বলছে যে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়াতে পুলিশকে টাকা দিয়েছি। কুসুমগ্রামে নিয়ে যাচ্ছে। অগ্নিমিত্রা পল অভিযোগ করেছেন, গরু পাচার হচ্ছে পুলিশ কী করছে? পুলিশ পুরো মদত করছে। পুলিশ ঘুষ খেয়েছে। পুলিশ এখন তৃণমূলের ক্যাডার। এদিকে, মঙ্গলবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। রাস্তায় যেতে যেতে উনি কি দেখেছেন বা কি বলেছেন সেটা নিয়ে বলতে পারবো না। সরকার কোন বেআইনি কাজকে সমর্থন করে না, করবেও না। যে অন্যায় করবে বা বেআইনি কাজের সাথে যুক্ত থাকবে দল এবং সরকার তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাবে। প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ থাকলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। উনি এখানে নাটক করছেন। আর ভারতবর্ষ থেকে বাংলাদেশে গরু পাচার হচ্ছে কাদের মদতে পাচার হচ্ছে? সরকারকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই নিয়ে সব নাটক করছেন। এদিন অগ্নিমিত্রা পলের উদ্দেশ্যে প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আপনি অভিযোগ দায়ের করুন। পুলিশকে তৃণমূল কংগ্রেস কখনোই নিয়ন্ত্রণ করে না। আর পুলিশকে দিয়ে তৃণমূল রাজনীতিও করেনা। পুলিশ পুলিশের কাজ করে। তাই তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা অন্যায় করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।